সরকারের শেষ বেলার ইস্তেহার দিশাহীন, নেই কর্ম সংস্থানের সুরাহা, দাবি বিজেপি’র

সরকারের শেষ বেলার ইস্তেহার দিশাহীন, নেই কর্ম সংস্থানের সুরাহা, দাবি বিজেপি’র

c529639859a3c7ca6817743b11e587ee

কলকাতা: তৃণমূল কংগ্রেস নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করার পরেই ময়দানে গেরুয়া শিবির৷ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শাসকদলের ইস্তেহারের তীব্র সমালোচনা করলেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য৷ তিনি বলেন, বিদায়ী সরকারের ইস্তেহারে ১১০ শতাংশ কাজ হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে৷ অথচ ২০১২ সালেই ৯০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছিল তৃণমূল৷ তাহলে গত আট বছরে এই সরকারের কর্মকাণ্ড কী? 

আরও পড়ুন-  বাড়ি বাড়ি রেশনের ঘোষণা নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ? জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

তিনি আরও বলেন, ২০১২ সালেই ৯০ শতাংশ কাজ হয়ে গেলে হঠাৎ করে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের প্রয়োজনই বা হল কেন? তাঁর কথায়, তৃণমূলের ইস্তেহারই প্রমাণ করে দিল কেন রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রয়োজন আছে৷ কেন কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত শেষ করার প্রয়োজন আছে৷ তাঁর দাবি, তৃণমূল যা ঘোষণা করেছে, তার সবটাই কেন্দ্রীয় প্রকল্প৷ প্রথমেই বলা যাক তাজপুর পোর্টের কথা৷ কেন্দ্রীয় সরকার না চাইলে এই পোর্ট বাস্তবায়িত হবে না৷ বিশেষ করে যেখানে কর্মসংস্থানের কথা বলা হচ্ছে৷ এছাড়াও খাদ্য সুরক্ষা, ডেডিকেটেড ফ্রেড করিডর, বার্ধক্য ভাতা, বাংলার আবাস যোজনায় ২৫ লক্ষ বাড়ি সব কটিই কেন্দ্রের প্রকল্প৷ শুধু নাম বদল করা হয়েছে৷ অশোকনগরে ওএনজিসি গ্যাস প্ল্যান্টও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প৷ 

এছাড়াও তৃণমূল সরকার কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কোনও দিশা দিতে পারেনি বলে তাঁদের দাবি৷ শমীক বাবু বলেন, তৃণমূলের ইস্তেহারে কর্ম সংস্থান বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনও প্রকল্প নেই৷ মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ১০০ দিনের কাজে ভারতে প্রথম পশ্চিমবঙ্গ৷ এর থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে এখানে কর্মসংস্থানের অন্য কোনও সুযোগ নেই৷ সেলফ এমপ্লয়মেন্টের কথা বিভিন্ন রাজ্যের সরকার বলে চলেছে৷ কিন্তু এ রাজ্যে সেই তাগিদ নেই৷ সেলফ এমপ্লয়মেন্ট তৈরি করতে তৃণমূল সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ৷ এই সরকারের কোও শিল্পনীতি নেই, রোড ম্যাপ নেই, জমি নীতি নেই, নিজেদের অবস্থান তারা স্পষ্ট করে না৷ তাঁর তোপ, এই সরকার ঘোষণা সর্বস্ব সরকার ছিল৷ আজ শেষ বেলায় যে নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করে যে কর্মসংস্থানের কথা বলার চেষ্টা হয়েছে, লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্রশিল্প গড়ে তোলার যে কথা বলা হয়েছে তার কোনও ভিত্তি নেই৷ এ রাজ্যে কী ভাবে শিল্পায়ন হবে, কী ভাবে বিনিয়োগ টানা হবে, সরকারের জমিনীতি কী হবে, তার কোনও দিশা নেই৷ গত দশ বছরে বড় শিল্প আনতে ব্যর্থ তৃণমূল সরকার৷ পুঁজিপতিরা রাজ্য থেকে ভিন রাজ্যে সরে গিয়েছে৷ 

আরও পড়ুন- তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহারে ১০ অঙ্গীকার, কী কী প্রতিশ্রুতি দিলেন মমতা?

তিনি বলেন, গত দশ বছরে রাজ্যে কত বিনিয়োগ এসেছে, কত স্থায়ী চাকরি করতে পেরেছে মানুষের সামনে সেই পরিসংখ্যান সরকার তুলে ধরতে পারেনি৷ সরকারি শূন্য পদ এখনও ফাঁকা৷ প্রতি বছর একটা করে টেট পরীক্ষা নিতে পারেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার৷ দশ বছরে মাত্র ২টি টেট৷ তাও নির্ভুল নয়৷ বিভিন্ন নিয়োগ পদ্ধতি আদালতের জলে জড়িয়ে পড়েছে৷ ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করতে পারেনি৷ রাজ্যের মানুষ কি শুধুই ২টাকার চাল খেয়ে খাকবে? নাকি নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে চাল কিনে খাবে? প্রশ্ন তাঁর৷ শমীকবাবু বলেন, আজও নতুন কোনও প্রতিশ্রুতি দিতে পারল না তৃণমূল৷ তাদের ইস্তেহার দিশাহীন৷ আমরা চাই রাজ্য শিল্প আসুক, যাঁরা চুক্তিভিত্তিক কাজ করছে, তাঁরা স্থায়ী পদ পাক৷   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *