সুন্দরবন: নদীবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় চরম সংকটে মিনাখাঁর চণ্ডীবাড়ি গ্রামের বাসিন্দারা। চলতি বছরের ২০ মে আমফানের জেরে বিদ্যাধরী নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়ায় ওই গ্রাম-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা ভেসে যায়৷ ভেসে গেছে ঘরবাড়ি৷ প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামবাসীরা৷
জল যেমন জীবন দান করে, তেমনই জীবন কেড়ে নিতেও পারে। রাজ্যে আমফানের জেরে চারিদিকে একাধিক ক্ষয়ক্ষতির কথা প্রকাশ্যে এসেছিল। দেখা গিয়েছিল রাজ্যের একাধিক অঞ্চলে বড় বড় গাছ ভেঙে পড়ায়, আশপাশের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট সহ যানবাহনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে প্রাণহানীর খবরও প্রকাশ্যে এসেছিল। ধীরে ধীরে সেই সমস্ত ক্ষতি সামলে উঠেছে রাজ্যবাসী। কিন্তু মোহনপুর গ্রামের ভাগ্যের পরিহাস, এখনও তার ফল ভোগ করে চলেছেন গ্রামবাসী।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। প্রায় একমাস ধরে জলে ডুবে থেকেই গ্রামবাসীরা দিন কাটাচ্ছিলেন। তারপর অনেক কষ্ট করে, বার তিনেকের প্রচেষ্টায় প্রশাসন ও এলাকাবাসী মিলিত ভাবে সেই নদী বাঁধ সারাই করেন। ধীরে ধীরে গোটা রাজ্যের মতো ছন্দে ফিরছিল মোহনপুরও। কিন্তু প্রকৃতি আবারও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে মোহনপুরবাসীদের ওপর। গত বৃহস্পতিবার, অমাবশ্যার ভরা কোটালে, বিদ্যাধরী নদী ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকে। নদীর জল এতটাই বেড়ে যায়, যার ফলে সারাই করা ওই বাঁধ আবারও ভেঙে যায়। ফলে ফের একবার জলের তলায় চলে যায় মোহনপুর ও সংলগ্ন অঞ্চল। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটেছে এর ফলে।
বর্তমানে মোহনপুরবাসীদের খোলা আকাশের নিচে অস্থায়ী তাবু খাটিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। পাশাপাশি জলের মধ্যে দিয়ে বেয়ে চলা বিষধর সাপ সহ একাধিক বিষাক্ত কীটপতঙ্গকে সঙ্গে করে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন মোহনপুরবাসী। কবে নদী বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হবে, হলেও আবার যে তা ভেঙে পড়বে না, তা নিয়েই গভীর সংশয়ে ভুগছেন এলাকাবাসী প্রায় ১০০ পরিবার। ফলে ঠিক কতদিন এভাবে অনিশ্চয়তার সঙ্গে দিন কাটবে সে সম্পর্কে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, গ্রামের প্রশাসনিক প্রধান এই অভিযোগকে অস্বীকার করে জানিয়েছেন, নিয়মিত গ্রামবাসীদের ড্রাইফুড বা শুকনো খাবার বিতরন করা হচ্ছে প্রশাসন তরফে।