lalu
নয়াদিল্লি: রাজনীতির আঙিনায় এহেন দৃশ্য বেশ বিরল৷ এক নেতাকে হাতে ধরে রান্না শেখালেন অন্য নেতা৷ তাও আবার ভিন্ন দলের৷ হ্যাঁ, খাসির মাংসে তেল, হলুদ, পেঁয়াজের সঙ্গে যেন নিঁখুতভাবে রাজনীতির মশলা মাখিয়ে দিলেন রাহুল-লালু৷ রসনায় মিলে গেল দুটি পৃথক দলের দুই প্রজন্ম।
সম্প্রতি দিল্লিতে লালু প্রসাদের বাসভবনে হাজির হয়েছিল রাহুল গান্ধী। সেখানে নৈশভোজের আয়োজন করে হয়েছিল৷ সে খবর আগেই মিলেছিল৷ কিন্তু, সেদিন যা যা ঘটেছিল, সেই খবর জানা গেল শনিবার। ওই দিনের একটি ভিডিয়ো প্যাকেজ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। তাতে দেখা যাচ্ছে, রাহুল গান্ধীকে হাতে ধরে চম্পারণ মিট, বলা ভালো বিহারি স্টাইলে খাসির মাংস রান্না করা শেখাচ্ছেন ৭৫ বছরের লালু প্রসাদ যাদব। জমিয়ে হাড়িতে কষিয়ে মাংস রান্না করছেনন রাহুল৷ তার পর গড়া তাওয়া রুটি দিয়ে সেই মাংস চেটেপুটে খেলেন রাহুল, লালু, তেজস্বী যাদব, লালুর মেয়ে মিসা ভারতী।
এদিন রান্নার ফাঁকেই রাহুল লালুকে প্রশ্ন করেন, আপনি দেশি খাবারের পাশাপাশি বিদেশি খাবার পছন্দ করেন? জবাবে লালু বলেন, আমার থাই স্যালাড বেশ পছন্দের। শুনেই রাহুল বলেন, “ওটা আমার বোন খুব ভাল বানায়। একদিন বলব, ও বানিয়ে পাঠিয়ে দেবে। সব কিছু একসঙ্গে দিয়ে মেশাতে হয়।”
এর পরই রাহুল লালুর কাছে জানতে চান, “আপনি রাজনীতিতে কী মশলা মেশান?” প্রশ্ন শুনে লালু হেসে ফেলেন। কিন্তু, রাহুল তাঁকে ফের জিজ্ঞেস করেন, “রাজনীতির মশলায় কী থাকা উচিত?” জবাবে লালু বলেন, “রাজনীতির মশলায় লড়াইয়ের জেদ থাকা উচিত। অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করা উচিত৷”
রাহুলের প্রশ্ন তালিকা ছিল বেশ দীর্ঘ৷ এর পরেই তিনি জানতে চান, বিজেপি কেন প্রতি দশ-পনেরো বছর অন্তর দেশে ঘৃণা ছড়াতে নেমে পড়ে? এ বিষয়ে আপনার মত কী? জবাবে লালু বলেন, “ওটা ক্ষমতার খিদের জন্য। ওদের সেই খিদে মিটতেই চায় না।” রাহুল জানতে চান, কী ভাবে এই সমস্যার মোকাবিলা করা যাবে? লালুর পরামর্শ কী? বর্ষীয়ান আরজেডি নেতা বলেন, “তোমার বাবা মা, দাদু, দিদা দেশকে যে রাস্তা দেখিয়েছেন, সেই পথেই থাকতে হবে। তা কখনও ভুলে যেও না।”
ওই জমাটি আড্ডার মাঝেই তেজস্বী আবার রাহুলের কাছে জানতে চান, তিনি রান্না জানেন কিনা। রাহুল বলেন, “আমি যখন কাজের জন্য ইউরোপে থাকতাম, তখন কাজ চালানোর মতো রান্না করতেই হত। ব্যাস সেটুকুই৷ বিশেষজ্ঞ নই।”
লালুর পরামর্শে রাহুলের হাতের মাংস কেমন হয়েছিল, তা তো তাঁরাই বলতে পারবেন। কিন্তু যে ভাবে রান্না ও রাজনীতিকে এদিন তাঁরা মিলিয়ে দিলেন, তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ৷