কলকাতা: করোনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে তৈরি হয়েছে আতঙ্কের আবহ৷ আক্রান্ত লক্ষাধিক৷ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা৷ তবে করোনা নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই৷ এমনটাই জানালেন বিশিষ্ট চিকিৎসক কৌশিক লাহিড়ি৷
একটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস নিয়ে যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে তা অনেকটাই মিডিয়া বা সোশ্যাল মিডিয়ার সৃষ্টি৷ পৃথিবীতে এই প্রথম কোনও ভয়ঙ্কর অসুখ আসেনি৷ এর থেকে অনেক বড় বড় মহামারির কবলে পড়েছে মানব সমাজ৷ কিছুদিন আগে ইবোলা নামে একটি ভাইরাস এসেছিল৷ যেটির মারণ ক্ষমতা ছিল করোনাভাইরাসের থেকে অনেক বেশি৷ এমনকী সার্স (সিভিয়ার একিউট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম) বা মার্স (মিডল ইস্ট একিউট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম)-এর মারণ ক্ষমতাও কোভিড করোনার থেকে ছিল অনেক বেশি৷ তা সত্ত্বেও জনমানসে করোনা নিয়ে এত আতঙ্ক কেন?
এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, করোনার মারণ ক্ষমতা কম হলেও, এটি অন্যান্য ভাইরাসের তুলনায় অনেক বেশি সংক্রামক৷ তিনি বলেন, আমাদের দেশে ১৩৪ কোটির মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ১৪৭৷ অথচ প্রতিদিন পথ দুর্ঘটনায় আমাদের দেশে মৃত্যু হয় কমপক্ষে ৩০০ জন মানুষের৷ তিনি আরও বলেন, শুনলে অবাক হবেন, প্রত্যেক দিন পাঁচ বছরের নীচে প্রায় ৪০০টি শিশুর মৃত্যু হয় পেট খারাপ জনিত অসুখ বা অপুষ্টিতে৷ টিবিতে আক্রান্ত হয়ে আজও প্রত্যেকদিন ভারতে প্রাণ হারান প্রায় ১২০০ মানুষ৷ অথচ এগুলি নিয়ে আমরা আতঙ্কিত নই৷ এসব নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা হয় না, টিভিতে খবর হয় না, স্টক মার্কেটও ভেঙে পড়ে না৷
কৌশিকবাবুর মতে, নোবেল করোনা ভাইরাস নিয়ে অনাবশ্যক একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ যার জেরে হাত পা গুটিয়ে ঘরের মধ্যে বসে আছে মানুষ৷ এটি আর পাঁচটার মতোই খুব সাধারণ একটি ইনফেকসন৷ এই সংক্রণ ছড়াচ্ছে সত্তোর উর্দ্ধ কিছু মানুষের মধ্যে৷ যারা অশক্ত, যাদের ব্লাড সুগার আছে, যাদের নিউমোনিয়া হচ্ছে, তারাই করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মুখ ঢলে পড়ছেন৷ কিন্তু তার মানে এই নয় যারাই আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরাই মারা যাচ্ছেন৷
তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ১০ হাজার মানুষ এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন৷ তার মধ্যে মারা গিয়েছেন মাত্র কয়েক হাজার৷ বাকি ৯৯ হাজার বা এক লক্ষের উপর মানুষ যে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না৷ করোনা সংক্রমণে মারণ হার ৩.৪ শতাংশ৷ তিনি জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা প্রয়োজন৷ যেমন জল দিয়ে বারবার হাত ধুতে হবে৷ হ্যান্ডশেক না করে নমস্কার করুন৷ কোনও ব্যক্তির খুব কাছাকাছি না আসাই ভালো৷ দূর থেকে কথা বলুন৷