বিলি হবে ত্রাণ! পরিযায়ী ‘উমা’র কষ্ট তুলে ধরবে বেহালার পুজো মণ্ডপ

এই বছরটা অন্যরকম। এই বছরটা আর্তনাদের, এই বছরটা কষ্টের, এই বছরটা মহামারীর।

 

কলকাতা: এই বছরটা অন্যরকম। এই বছরটা আর্তনাদের, এই বছরটা কষ্টের, এই বছরটা মহামারীর। বছরের প্রায় শুরু থেকেই চারিদিকে হাহাকার। ভাইরাস আক্রান্তদের পাশাপাশি পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্টের চিত্র ফুটে উঠেছে গোটা দেশে। বিভিন্ন রাজ্যের একাধিক জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিকদের করুণ দশা দেখেছে দেশ। যানবাহনের ব্যবস্থা না থাকায় পেটের জ্বালায় রাস্তার পর রাস্তা হেঁটে গেছে তারা, আশ্রয় না পেয়ে কখনো রেললাইন, কখনো বা ফুটপাতেই কাটিয়েছে রাত। সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্টের প্রতিচ্ছবি যেন ফুটে উঠছে বেহালার পূজা মণ্ডপে। এবার মহিষাসুরমর্দিনী রুপে নয়, পরিযায়ী উমা রূপে বেহালা বড়িশা ক্লাবে ধরা দেবেন দশোভূজা।

পরিযায়ী এক মহিলা শ্রমিকের আদলে তৈরি হয়েছে মূর্তি। শুধু দুর্গা মূর্তি, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী এবং সরস্বতী, সকলেই পরিযায়ী। মূর্তির অবয়ব দেখে বোঝা যাচ্ছে, তারা পথ চলতে চলতে ত্রাণ পাওয়ার আশায় ঘুরে তাকিয়েছেন। উমার কোলে রয়েছ কার্তিক, একপাশে লক্ষ্মী, অন্যপাশে সরস্বতী। মন্ডপের ঢুকতেই শোনা যাবে কোলাহল, ত্রাণের কোলাহল। ঠিক যেমন ত্রাণ নিতে গেলে মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়, কোলাহল শোনা যায়, ঠিক তেমনই শুনতে পাওয়া যাবে মন্ডপের ভিতরে। ‘কোথায় যাবেন?’ ‘কি চাই?’ প্রশ্নের জবাবে শোনা যাবে, ‘ত্রাণ দেবে গো?’, ‘ত্রাণ চাই’ এই ধরনের প্রশ্ন-উত্তর শোনা যাবে মন্ডপের ভিতরে ঢুকলেই।

শিল্পী রিন্টু দাসের বক্তব্য, এবছর গোটা দেশজুড়ে এই ধরনের চিত্রই দেখা গিয়েছিল। সব জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিকদের হাহাকারের ছবি ফুটে উঠেছিল। সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্মান জানাতেই এই পরিকল্পনা বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে এ বছর পুজো হওয়া নিয়ে প্রথম থেকে সংশয় ছিল, সেই কারণে বাজেট কম ছিল। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্মান দেওয়ার কথা আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলেন শিল্পী রিন্টু। তাই অন্য কোন চিন্তা না করেই শিল্পী পল্লব ভৌমিককে সঙ্গে নিয়ে মূর্তি তৈরি শুরু করেন তিনি। মন্ডপের উমার মূর্তি বানিয়েছেন পল্লবই, তার কৃষ্ণনগরের স্টুডিওতে। মূর্তি একেবারেই রঙিন বানানো হয়নি। শাড়িতে রয়েছে মাটির রঙের ছোঁয়া। সব মিলিয়ে শহর এবং রাজ্য তো বটেই, দেশেও প্রশংসিত হচ্ছে বড়িশা ক্লাবের এই উদ্যোগ। সাধুবাদ জানানো হচ্ছে এমন প্রচেষ্টাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − fourteen =