কলকাতা: করোনা আবহেই নন্দন প্রাঙ্গণে শুরু হয়ে গেছে এবছরের কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। সারা বছর ধরে এই সাতদিন ব্যাপী উৎসবের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন শহরের সিনেমা প্রেমী মানুষেরা। দেশ বিদেশের বাছাই করা সিনেমায় প্রতি বারের মতো এবারেও জমজমাট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রুপোলি পর্দায় নানান স্বাদের ছবির ভিড়ে এবার জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশও।
২৬ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এশিয়ান সিলেক্ট ক্যাটাগরিতে যে সমস্ত ছবি নির্বাচিত হয়েছে তার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশী ছবিটির নাম হল ‘নোনাজলের কাব্য’। রবিবার ছিল এই ছবির প্রথম স্ক্রিনিং। বাংলাদেশ থেকে যাতায়াতের জটিলতার কারণে এই ছবির পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত কলকাতায় আসতে পারেন নি। কাঁটাতারের ওপার থেকে তাঁর অধীর অপেক্ষা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে। ‘নোনাজলের কাব্য’ ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে কলকাতায়।
‘নোনাজলের কাব্য’ এক শিল্পীর গল্প বলে, যিনি ঢাকা থেকে দক্ষিণ উপকূলে গিয়ে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি নানা ঝড়-ঝাপটার সম্মুখীন হন। পরিবেশের প্রতিকূলতা, জোয়ারের উচ্ছ্বাসের মাঝেই ছবিটি একটি অদ্ভুত বাঁকে মোড় নেয় যখন দুর্যোগের জন্য গ্রামবাসীরা ওই শিল্পী এবং তাঁর সৃষ্টিকে দায়ী করেন। ইলিশ মাছ, যার উপর বাংলাদেশী অর্থনীতির একটা বড় অংশ নির্ভর করে থাকে, এ ছবিতে তার ব্যবহারও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। নিজের তৈরি ছবি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উচ্ছ্বসিত শোনায় পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের গলা। “এই ছবিতে বর্ষা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, উত্তাল সমুদ্র প্রভৃতি সিনেমাটিক ভঙ্গিতে দেখানোর জন্য অত্যাধুনিক ৫.১ সাউন্ড ব্যবহার করা হয়েছে। নাটকীয় এই ভঙ্গিকে বাঁচিয়ে রাখার এই লড়াইকে আমি স্বাগত জানাই। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের কাছে এই কারণে আমি কৃতজ্ঞ”, বলেন তিনি।
এই ধরণের ছবি তৈরি করতে কেন আগ্রহী হলেন? পরিচালকের কথায়, “আমাদের বাংলাদেশে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকতটি রয়েছে, প্রায় ১০০ মাইল লম্বা। ছোটোবেলা থেকেই সমুদ্রের ধারে ধারে ঘুরে বেড়িয়ে বড় হয়েছি আমি। সমুদ্রকে সঙ্গে নিয়ে যাঁরা বেঁচে থাকেন, সেই মাঝি, জেলেদের জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখেছি আমি।” আর সেই অভিজ্ঞতা থেকেই গড়ে উঠেছে ‘নোনাজলের কাব্য’।