কলকাতা: চব্বিশকে পাখির চোখ করে বেঙ্গালুরুতে শুরু হয়েছে ২৬টি বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের বৈঠক৷ ওই বৈঠকেই বড় ঘোষণা করলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে৷ তিনি জানিয়ে দিলেন, কংগ্রেস ক্ষমতা বা প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য লালায়িত নয়। বরং সংবিধান, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র এবং সামাজিক ন্যয় রক্ষাই দেশের প্রধান বিরোধী দলের লক্ষ্য৷
মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে শুরু হয় বিজেপি বিরোধী দলগুলির বৈঠক। কংগ্রেস যে প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার নয়, তা এ দিন আরও একবার স্পষ্ট করে দেন কংগ্রেস সভাপতি৷ তিনি বলেন, ‘‘চেন্নাইয়ে এমকে স্ট্যালিনের জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও আমি বলেছিলাম, কংগ্রেস ক্ষমতা বা প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য উৎসুক নয়। আমাদের লক্ষ্য, দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র এবং সামাজিক ন্যয়কে সুপ্রতিষ্ঠিত করা।’
সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, এদিন বৈঠকে খড়্গে বলেন, ‘‘আমরা মোট ২৬টি দল এখানে উপস্থিত হয়েছি। সম্মিলিত ভাবে আমরা ১১টি রাজ্য চালাচ্ছি। বিজেপি ৩০৩টি আসন একা পায়নি। ওরা জোটসঙ্গীদের ভোট ব্যবহার করে ক্ষমতায় এসেছে৷ তার পর তাদেরই বাতিল করে দিয়েছে। ভোটের আগে আজ ফের বিজেপি সভাপতি এবং নেতারা রাজ্যে রাজ্যে দৌড়ে পুরনো সঙ্গীদের মানভঞ্জনে উদ্যত হয়েছেন।’’ বৈঠকে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ‘অপব্যবহার’ নিয়েও সোচ্চার হন কংগ্রেস সভাপতি৷
এদিন খাড়্গে স্পষ্টভাবে বলেন, কংগ্রেস নিজেকে বিগ ব্রাদার হিসাবে প্রতিপন্ন করতে চাইছে না৷ ভারতবর্ষের ইতিহাসে ১০ বছর জোট গড়ে স্থায়ী সরকার চালানোর অভিজ্ঞতা একমাত্র কংগ্রেসেরই আছে। কংগ্রেস বরাবরই সহনশীল ও পরমত সহিষ্ণু। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতে পারে। তাই তো ২০০৪-এ লোকসভা ভোটে কেরলে বামেদের সঙ্গে লড়াই করার পরেও তাঁদের সমর্থন নিয়েই কেন্দ্রে সরকার গড়তে সক্ষম হয়েছিল এই জাতীয় দল৷ দেশে বিকল্প সরকার গড়ার ক্ষেত্রে কংগ্রেস ছাড়া গতি নেই।
অনেকের মতে, কংগ্রেসের এই অবস্থান অত্যন্ত কৌশলী। কারণ, লোকসভায় ৫৪২টি আসনের মধ্যে আড়াইশর বেশি আসনে বিজেপি সঙ্গে সম্মুখ সমরে নামবে কংগ্রেস৷ সেই লড়াইয়ে কোনও তৃতীয় পক্ষের অস্তিত্ব নেই। কংগ্রেস যদি একা দেড়শ বা তার বেশি আসন দখল করতে পারে, তাহলে সংখ্যার বিচারে তারাই হবে জোটের লিডার৷ তাই এখন থেকে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য হুলস্থূল করে লাভ নেই। এখন লক্ষ্য হোক মোদী বিরোধী হাওয়া জোরাল করা। যা কংগ্রেসের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এই লড়াইয়ে শরিকদের সাহচর্য লাগবেই।