ত্রিশূর: বেড়াতে অনেকেই ভালোবাসেন। তবে বেড়ানোর নেশায় বুঁদ হয়ে ভালো বেতনের চাকরি অনায়াসেই ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা বিরল৷ এই অভিনব পদক্ষেপটি করলেন কেরলের ত্রিশূরের দম্পতি হরিকৃষ্ণন জে এবং লক্ষ্মী কৃষ্ণ।
২০১৮ সালে হানিমুনে গিয়ে এই দম্পতি ভ্রমণের প্রতি নিজেদের অপরিসীম ভালোলাগার বিষয়টি বুঝতে পারেন৷ এরপরই ভালো বেতনের চাকরি ছেড়ে দেন এই দম্পতি৷ কোনও কাজের চাপ ছাড়াই যখন-তখন যেখানে ইচ্ছে বেড়ানোর সুবিধা পেতে শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং। প্রথমে তাঁরা একটি আন্তর্জাতিক রোড ট্রিপে যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও, করোনা নামক অতিমারি তাতে জল ঢেলে দেয়৷ কারণ বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক সীমানা অক্টোবরের মধ্যে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে নিজের দেশকে আবিষ্কারের নেশায় বেরিয়ে পড়েন এই দম্পতি। তাঁদের পরিবারের সমর্থন না থাকলে যে এই ধরনের সাহসী পদক্ষেপ তাঁরা করতে পারতেন না, তা স্বীকার করেছেন হরিকৃষ্ণন জে এবং লক্ষ্মী কৃষ্ণ দু’জনেই৷ এখনও পর্যন্ত দু’জনে ১০,০০০ কিলোমিটার ভ্রমণ করেছেন এবং তাঁদের সফর চলছে৷
সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমে তাঁদের গল্পটি বলতে গিয়ে হরিকৃষ্ণন বলেন, ‘২০১৮ সালে থাইল্যান্ডে হানিমুনে গিয়ে আমাদের ভ্রমণের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। ফিরে এসে শুরু হয় এই কঠিন যাত্রাপথের পরিকল্পনা। ইউটিউবে একটি চ্যানেলও রয়েছে আমাদের।’ তাঁদের ভ্রমণের যাত্রাপথ শুরু হয় ঋষিকেশ, কর্ণাটকের হিমাচল, হাম্পি এবং চিকমাগালুরের মতো বিভিন্ন ছোট ছোট গন্তব্যের মধ্য দিয়ে৷ ভ্রমণের ব্যয় কমাতে ২০২০ সালের অক্টোবরে দম্পতি ঠিক করেন তাঁরা নিজেদের হুন্ডাই ক্রাইটাতে ভ্রমণ করবেন এবং রাতেও সেখানে থাকবেন।
ঘুমানোর জন্য গাড়ির পিছনের সিটে লাগিয়ে নিয়েছেন একটা মাথা রাখার জায়গা। ঘুনোর সময় সিট গুটিয়ে মাদুর আর চাদর পেতে নিলেই তৈরি হয়ে যায় বিছানা। ১০ জোড়া কাপড়জামা নিয়েই তাঁরা বেরিয়ে পড়েন৷ স্নান এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ করতে সেখানকার পেট্রোল পাম্পের বাথরুম ব্যবহার করেন। সঙ্গে থাকে রান্নাবান্না করার সামান্য সরঞ্জাম, বালতি, মগ, জলের পাত্র৷ জল শেষ হলে, কাছাকাছি সুরক্ষিত জায়গা থেকে জল ভরে নেন৷ ১০ লিটারের তিনটি ক্যান সঙ্গে রাখেন তাঁরা। আর খিদে পেলে ছোট সিলিন্ডার আর গ্যাস বের করে রাস্তার পাশেই ফ্রাইং প্যানে রান্নাও সেরে নেন। আর থাকে ভিডিও ও ছবি এডিটের জন্য ল্যাপটপ।