কার্গিল জয়ের একুশে পা, বীর নায়কদের ভার্চুয়াল শ্রদ্ধাজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানকে আমরা বন্ধু ভেবেছিলাম৷ কিন্তু পাকিস্তান বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল৷ কার্গিলে এসে ওরা ওদের স্পর্ধা দেখিয়েছিল৷ তবে আমাদের সেনা উচিত শিক্ষা দিয়েছে৷ যা কোনও দিনও ভোলার মতো নয়৷’

নতুন দিল্লি: যুদ্ধজয় এবং বীর সেনানীদের বিজয়গাথা। কার্গিল যুদ্ধ জয় ভারতীয় সেনাবাহিনীর অসমসাহসিকতার কাহিনি বয়ান করে। টানা দু’মাসের যুদ্ধে ৫২৭ জন সেনার প্রাণের বিনিময়ে মাতৃভূমির সম্মান রক্ষা করে ভারতীয় সেনা। দিনরাত এক করা সেই বিধ্বংসী যুদ্ধের প্রতিটি পাতার এখনও সাক্ষী কার্গিলের দুর্গম পাহাড়।

প্রায় ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত জম্মু কাশ্মীরের দুর্গম পার্বত্য এলাকা কার্গিল। পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এই এলাকায় ভারতীয় সেনার কড়া নজরদারি থাকে বরাবর। কিন্তু শত্রুর তো ছলের বা কূট পরিকল্পনার সীমা নেই। তাই সেই নজরদারি এড়িয়ে ১৯৯৯ সালের কোনও এক সময়ে ভারতে ঢুকে পড়ে একদল অনুপ্রবেশকারী। প্রথমে ভারতীয় সেনার নজর এড়াতে পারলেও শেষ অবধি শেষরক্ষা হয়নি। একদল স্থানীয় মেষপালক ভারতীয় বাহিনীর কাছে খবর পৌঁছে দেয়। আগে থেকে অনুপ্রবেশ করে ঘাঁটি গুছিয়ে রাখায় প্রথম দিকে সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে ছিল অনুপ্রবেশকারীরা। কিন্তু দ্রুতগতিতে তাদের ধরে ফেলতে সক্ষম হয় ভারতীয় সেনা। চিহ্নিত করা হয় শত্রু শিবিরের আক্রমণের স্থান। 

২৫ জুন মুকোশ উপত্যকার জুলুতে আঘাত হানে ভারতীয় সেনা। অভিযানের নাম দেওয়া হয় অপারেশন বিজয়। টানা যুদ্ধ চলতে থাকে। প্রতিকূল পরিবেশ, উচ্চতা সব মিলিয়ে প্রচুর সমস্যার মুখে দাঁড়িয়েও শেষ পর্যন্ত জয় নিশ্চিত করে সেনাবাহিনী। অপারেশন বিজয়কে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বীরত্বপূর্ণ অপারেশন হিসেবে স্মরণ করা হয়। ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা, মনোজকুমার পাণ্ডে, মেজর বিবেক গুপ্তার মতো আরও বহু সাহসী বীরদের বলিদানের ফলে কার্গিল পোস্ট শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয় ভারতীয় সেনা। সেনাবাহিনীর এই দুর্দমনীয় সাহসের কথা মনে রাখতেই কার্গিল যুদ্ধ শেষের দিনটিকে কার্গিল দিবস হিসেবে প্রতিবছর পালন করা হয়। 

কার্গিল দিবসের ২১ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে ভারতীয় সেনার এই বীরগাথা স্মরণ করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানকে আমরা বন্ধু ভেবেছিলাম৷ কিন্তু পাকিস্তান বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল৷ কার্গিলে এসে ওরা ওদের স্পর্ধা দেখিয়েছিল৷ তবে আমাদের সেনা উচিত শিক্ষা দিয়েছে৷ যা কোনও দিনও ভোলার মতো নয়৷’ তবে করোনা আবহে এবারের কার্গিল দিবস উদ্যাপনটা একেবারেই অন্যরকম৷ অন্যবারের মতো হয়নি কোনও অনুষ্ঠান, বা কোনও বিশেষ প্যারেড৷ করোনা মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখে তাই এবারে কার্গিল দিবস উদযাপন একেবারেই ভার্চুয়াল৷ এরকমই এক অভিনব উদ্যোগ নেয় দিল্লির এক শপিং মল৷ যেখানে গত শুক্রবার থেকেই ভার্চুয়ালি শুরু হয়েছে কার্গিল নায়কদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন৷

এই শপিং মল তাদের ওয়েবসাইটে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করবে কার্গিল যোদ্ধাদের তাঁদের পরিবারকে লেখা চিঠি৷ সঙ্গে বিশেষ ভিডিওতে ফুটে উঠবে তাঁদের লড়াইয়ের কথাও৷ রয়েছে সাধারণ মানুষদের জন্য বিশেষ প্রতিযোগিতা৷ এছাড়া ভারতীয় সেনার বিভিন্ন উইং টুইট বার্তায় দেশবাসীকে কার্গিল দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছে।

https://www.facebook.com/601672369973149/posts/1775956462544728/
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 + 5 =