নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি হিমাচল কন্যা। মান্ডি তথা হিমাচল প্রদেশের ভূমিকন্যা। সেই বলিউড স্টার, বলিউডের ‘কুইন’ কঙ্গনা রানাওয়াত লোকসভা নির্বাচনে মান্ডিতে বিজেপি প্রার্থী হয়ে এখন বেশ বিপাকে পড়ে গিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে চলে গিয়েছেন কৃষক সমাজের বড় অংশ। এই লোকসভা কেন্দ্রে অর্ধেকের বেশি ভোটার কৃষিজীবী। সেই কৃষকদের বড় অংশ অতীতে কঙ্গনার একটি মন্তব্যের কারণে তাঁর বিরোধিতা করতে শুরু করেছেন। কৃষকদের হুঁশিয়ারি সেই মন্তব্যের জন্য অবিলম্বে যদি কঙ্গনা ক্ষমা না চান, তাহলে তার ফল ভুগতে হবে ভোটবাক্সে। অর্থাৎ বল এখন কঙ্গনার কোর্টে।
কোন বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন কঙ্গনা? ঘটনা হল বছর তিনেক আগে কৃষক আন্দোলন যখন দিল্লিতে বড় আকার ধারণ করেছিল সেই সময় এক বৃদ্ধা কৃষককে বিলকিস বানো বলে কটাক্ষ করেছিলেন কঙ্গনা। তাঁকে শাহিনবাগের বিলকিস বানো বলেছিলেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় কঙ্গনা লিখেছিলেন, এখানেও হাজির হয়ে গিয়েছেন শাহিনবাগের দাদি! এখানেই শেষ নয়। তাঁর মন্তব্য ছিল, একশো টাকা দিলেই এমন বিক্ষোভকারী পাওয়া যায়। বলিউড স্টারের এমন মন্তব্য নিয়ে সেই সময় কৃষক সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তিন বছর আগেকার সেই ঘটনা তুলে ধরে নতুন করে সুর চড়াতে শুরু করেছেন মান্ডির কৃষকরা। এই পরিস্থিতিতে মান্ডির কংগ্রেস প্রার্থী বিক্রমাদিত্য সিংকে কৃষক সমাজ সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছে। কৃষক সমাজের অভিযোগ, হিমাচল প্রদেশের আপেল শিল্প ও তার বাণিজ্য ব্যবস্থা গত দশ বছরে জোর ধাক্কা খেয়েছে। এমনকী ইরান থেকে সস্তায় আপেল আমদানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন কৃষকরা। তাই আপেল ব্যবসা সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন কৃষকরা। সবমিলিয়ে যতটা সহজে জয় পাবেন বলে ভেবেছিলেন কঙ্গনা, সেটা কিন্তু হচ্ছে না।
এদিকে আরও একটি বিষয় নিয়ে ভাবতে হচ্ছে কঙ্গনাকে। গত লোকসভা নির্বাচনে মান্ডিতে বিজেপি প্রার্থী চার লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জেতার কয়েক বছর পরে মান্ডির উপনির্বাচনে কংগ্রেস আসনটি তাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়। এরপর বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। এই বিষয়টিও ভাবাচ্ছে বলিউড স্টারকে। সেই সঙ্গে মান্ডি লোকসভা কেন্দ্রের মানুষের দৈনন্দিন সুখ-দুঃখ, তাঁদের সমস্যার কথা সংসদে কঙ্গনা আদৌ তুলে ধরতে পারবেন কিনা, সেটা নিয়েও জোর প্রচার করছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের দাবি প্রচারে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে তারা। যা অস্বস্তি বাড়িয়েছে বিজেপির। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতির মোকাবিলা কঙ্গনা কীভাবে করেন, তার উপরেই নির্ভর করছে এই লোকসভা কেন্দ্রের ফলাফল, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।