কামদুনি-কাণ্ডে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য

কামদুনি-কাণ্ডে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য

kamduni case

কলকাতা: কামদুনি গণধর্ষণ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য সরকার৷ এই মামলায় রাজ্য যে হাই কোর্টের রায়ে সন্তুষ্ট নয়, সে কথা আগেই জানিয়েছিল৷ সোমবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। 

গত শুক্রবার ১০ বছর পর ২০১৩ সালের কামদুনি গণধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাই কোর্ট। কামদুনির ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় দুই ধর্ষকের ফাঁসির সাজা খারিজ করে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ৷ পাশাপাশি যেসব অভিযুক্তদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছিল নগর দায়রা আদালত, তাদের বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণের অভাবেই এই রায় বলে জানানো হয়৷ 

কলকাতা হাই কোর্টের এই রায়ের পর কামদুনির নির্ভয়রা দুই বন্ধু এবং পরিবার হতাশা প্রকাশ করেছিল৷ আদালত চত্বরেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন কামদুনি আন্দোলনের প্রথম সারিতে থাকা মৌসুমী কয়াল, টুম্পা কয়ালরা৷ তাঁদের বক্তব্য ছিল, ‘‘এ রাজ্যে আর সুবিচারের আশা নেই।’’ কিন্তু রাজ্যের তরফে সাফ জানানো হয়, হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তারা সুপ্রিম কোর্টে যাবে। এই বিষয়ে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডিকে। এরই মধ্যে সোমবার সকালেই সুপ্রিম কোর্টের চার বিচারপতির বেঞ্চে এই মামলায় আবেদন জানানো হল। রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, এই ধরনের  অপরাধীরা বেকসুর খালাস পেলে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে। হাই কোর্টের রায়ে অবিলম্বে স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক।

২০১৩ সালের ৭ জুন৷ পরীক্ষা দিয়ে কামদুনির বাড়িতে ফিরছিলেন রাজারহাট ডিরোজিও কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী৷ অভিযোগ, বাস থেকে নেমে হেঁটে বাড়ি ফেরার সময় তাঁকে রাস্তা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ পাঁচিল ঘেরা একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে দফায় দফায় গণধর্ষণ করে ন’জন দুষ্কৃতী। পৈশাচিক নির্যাতনের পর ওই ছাত্রীটিকে ভেড়িতে ফেলে পালায় দুষ্কৃতীরা। এদিকে মেয়ে বাড়ি ফিরছে না দেখে তাঁর খোঁজ শুরু করে পরিবার৷ এলাকার লোকজনকে নিয়ে খোঁজ করতে করতে গ্রাম থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে আট বিঘে ভেড়ি অঞ্চলে একটি পাঁচিলের পাশে রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত ওই ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করে তাঁরা। এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য৷ দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডের মতো আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে দেশের অন্যান্য প্রান্তেও। দোষীদের চরম শান্তির দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five − 4 =