কলকাতা: হৃদ্রোগে আক্রান্ত শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তিনি চান কোনও বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা হোক। কিন্তু ইডি তাঁর দাবি মানতে নারাজ। কলকাতা হাই কোর্টে এই নিয়ে আপত্তিও তোলে তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এদিন হাই কোর্ট পাল্টা জানতে চাইল, এতে অসুবিধাটা কোথায়? এই মামলায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘হাসপাতাল নিয়ে প্রত্যেকেরই নিজস্ব পছন্দ-অপছন্দ থাকে।’’ বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ বিষয়ে ইডিকে তাদের মতামত জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ৩০ মে গ্রেফতার হন ‘কালীঘাটের কাকু’৷ এক সময় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের কর্মী ছিল এই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র৷ নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তিনি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বলে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সুজয় গ্রেফতার হওয়ার পরই প্রয়াত হন তাঁর স্ত্রী৷ সেই সময় কিছুদিন প্যারোলে মুক্তি পেয়েছিলেন৷ কিন্তু ‘ছুটি’ শেষে জেলে ফেরার পথেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন কাকু। তাঁকে পিজি বা এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানানা, তাঁর হার্টে ব্লকেজ আছে। বাইপাস সার্জারি করাতে হবে৷ কিন্তু সুজয় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর দাবি জানান’।
এসএসকেএমে-র প্রতি তাঁর আস্থা নেই জানিয়ে সুজয় তাঁর সামর্থ্য অনুযায়ী কোনও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর আর্জি জানান৷ এতে প্রবল আপত্তি জানায় ইডি। ব্যাঙ্কশাল কোর্ট সুজয়ের অনুরোধ খারিজ করে দিয়েছে। বিচারভবন জানায়, যে হাসপাতালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসা হচ্ছে, সেখানে সুজয়ের চিকিৎসাও ভালই হবে৷ মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত আরও একটি মামলা ওঠে হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে।
ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেন, ‘‘বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হলে ১৬ দিন প্যারোলে মুক্ত থাকবেন তিনি। তার পর ফের এসএসকেএমে চলে যাবেন কোনও অজুহাত দিয়ে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সময়েও একই বক্তব্য ছিল। তিনিও নাকি ভীষণ অসুস্থ ছিলেন।’’ এর পরেই আদালত জানতে চায়, ‘‘তবে কি সুজয়কে জামিন না দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করানো হয়, তাতে কি কোনও সুরাহা হবে? এ বিষয়ে কি কোনও আপত্তি আছে ইডির?’’ আগামী বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানি।