ফের অভিষেকের প্রসঙ্গ তুললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়! কেন অভিষেকের নাম তুলেছিলেন, দিলেন সেই ব্যাখ্যাও!

ফের অভিষেকের প্রসঙ্গ তুললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়! কেন অভিষেকের নাম তুলেছিলেন, দিলেন সেই ব্যাখ্যাও!

8035f6303a82b421c096a4c1a56dfa0b

কলকাতা:  নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে কয়েক সপ্তাহ আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন সিবিআই প্রয়োজন মনে করলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করতে পারে। যে নির্দেশে ঝড় বয়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে।

এরপরই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। তারপরেই শীর্ষ আদালতের নির্দেশে সেই সংক্রান্ত মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। যে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে রাজ্যে। এই আবহের মধ্যে ফের অভিষেকের প্রসঙ্গ তুললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কেন তিনি অভিষেকের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছিলেন সেই ব্যাখ্যা দিলেন তিনি।

সোমবার আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে বিচারপতি বলেছেন, ”ওই মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আসবে কেন? সে তো কুন্তল ঘোষ নিজেই তুলেছেন। কোনও রাজনৈতিক দলের নাম বা প্রসঙ্গ বা কোনও সুবিধা নেওয়া, এসব তো আসে না। আমার যতদূর মনে পড়ে আমার কাছে যে ডকুমেন্ট জমা পড়ে তাতে কুন্তল নিজেই অভিষেকের নাম করেন। সে তো আমার বানানো বা আকাশ থেকে পেড়ে আনা কোনও নাম নয়!” এভাবেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট করেছেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তিনি অভিষেকের নাম সামনে আনেননি।

বিভিন্ন সময়ে আদালতে পেশ করার সময় কুন্তলকে অভিযোগ করে বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে দিয়ে অভিষেকের নাম বলানোর ব্যাপারে নাকি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা চাপ দিচ্ছেন। অর্থাৎ সেই সূত্রেই অভিষেকেকে প্রয়োজনে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে এমন কথা তিনি বলেছিলেন বলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বোঝাতে চেয়েছেন। আইনজীবী মহলের একাংশ মনে করছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যা বলছেন তার পিছনে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। আইনজ্ঞ মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন প্রয়োজন মনে করলে সিবিআই জেরা করতে পারে। অর্থাৎ একবারের জন্যও অভিষেককে কোনও ভাবেই অভিযুক্ত করার চেষ্টা করেননি তিনি। তাই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কেন অভিষেকের প্রসঙ্গে উত্থাপন করেছিলেন বলতে গিয়ে যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা একেবারেই সঠিক বলে আইনজীবী মহলের একাংশ মনে করছেন।

বিরোধীরা নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে নাম না করে যেভাবে অভিষেককে ধারাবাহিকভাবে নিশানা করে গিয়েছেন ঠিক তখনই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে অভিষেকের প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল। রাজনৈতিকভাবে যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বলেই তার অভিঘাত রাজ্য রাজনীতিতে এতটা পড়েছে। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলা থেকে সরে যেতে হয় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। কিন্তু এই ইস্যুতে সাধারণ মানুষের সিংহভাগ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পাশেই রয়েছেন। তাঁর সমর্থনে রাস্তায় মিছিল পর্যন্ত বেরিয়েছে। যবে থেকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি শুরু হয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে, তখন থেকেই তিনি রাজ্যবাসীর একটা বড় অংশের কাছে রীতিমতো আইকনে পরিণত হয়েছেন। তাঁর একের পর এক নির্দেশ এবং পর্যবেক্ষণকে সাদরে গ্রহণ করেছে রাজ্যবাসী। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আসার পর হতাশ হয়ে পড়েছেন চাকরির দাবিতে রাস্তায় থাকা আন্দোলনকারীরা। এই পরিস্থিতিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট করলেন কেন অভিষেকের নাম তিনি উত্থাপন করেছিলেন। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *