কলকাতা: আদালতের নির্দেশ পালন করা হয়নি৷ এবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির বেতন বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। হুঁশিয়ারি শুনেই ভরা এজলাসে ভেঙে পড়লেন গৌতম পাল। সোমবার বিচারপতির তলব পেয়ে তড়িঘড়ি কলকাতা হাই কোর্টে হাজিরা দিয়েছিলেন পর্ষদ সভাপতি। কিন্তু আদালতের নির্দেশ না মানায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি আপনার বেতন বন্ধ করে দিচ্ছি। সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও দেবেন।’’ শুনেই গৌতম হকচকিয়ে যান৷ বলেন, ‘‘দয়া করে এটা করবেন না।’’
টেট পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ পালন করেনি পর্ষদ৷ সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানির ছিল সোমবার। শুনানি চলাকালীনই পর্ষদ সভাপতিকে তলব করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তলব পেয়েই ছুটে আসেন পর্ষদ সভাপতি৷ তার পর তাঁদের মধ্যে যে কথোপকথন হয়—
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়: ডিভিশন বেঞ্চে মামলার নম্বর কোথায়?
এই প্রশ্নের কোনও সন্তোষজনক উত্তরই দিতে পারেননি গৌতম পাল৷ এর পরেই বিচারপতি বলেন, ‘আমি আপনার বেতন বন্ধ করে দিচ্ছি। ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেবেন।’ সেই কথা শুনেই কাদো কাদো হয়ে যায় পর্ষদ সভাপতি৷ তিনি বলেন, ধর্মাবতার দয়া করে এক সপ্তাহ সময় দিন। আমি আপনার নির্দেশ পালন করব। দয়া করে সময় দিন৷ পর্ষদ আমাকে বেতন দেয় না। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমি বেতন পাই।
একথা শোনার পরেই বিচারপতি বলেন, তা হলে আমি কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়কে বলে দিচ্ছি। জবাবে গৌতম বলেন, আমার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দয়া করে এটা করবেন না। বাড়িতে অসুস্থ মা রয়েছে। আমি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করি।
এর পর বিচারপতি তাঁকে শান্ত হতে বলেন। ৫ মিনিট সময়ও দেন৷ বলেন, বাইরে গিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরামর্শ নিন। তারপর আমাকে জানান। ৫ মিনিট পরে এসে পর্ষদ সভাপতি এসে জানান, ধর্মাবতার আমি আপনার নির্দেশ কার্যকর করব। পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ দেব ওই প্রার্থীকে। ডিভিশন বেঞ্চেও যাব না।
এর পর তাঁকে আরও ২ সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। এর পর হাত জোড় করে বিচারপতি বলেন, আপনারা অধ্যাপক মানুষ। আপনাদের সব সময় শ্রদ্ধা করি। কিছু রাজনৈতিক নেতা আদালতের নামে উল্টোপাল্টা কথা বলেন তাঁদের শ্রদ্ধা করি না।