কলকাতা: স্কুলের শিক্ষকদের বেতন হচ্ছিল না দীর্ঘ দিন৷ অভিযোগ আসতেই কলকাতা হাই কোর্টের রোষের মুখে পড়ে ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ড। স্কুল কর্তৃপক্ষকে তীব্র ভর্ৎসনা করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, স্কুল চালাতে না পারলে আদানিকে বেচে দিন। মাত্র পাঁচ হাজার টাকা বেতন৷ তাও আপনারা দিতে পারছেন না। হাই কোর্টের ধমক খেয়েই নড়েচড়ে বসে স্কুল কর্তৃপক্ষ৷ আদালতের নির্দেশে এবার বকেয়া বেতন পাবেন ইসিএল-এর স্কুলের শিক্ষকরা। এই খবরে স্বভাবতই খুশি তাঁরা।
উল্লেখ্য, ইস্টার্ন কোলফিল্ডের অধীনে ঝাড়খণ্ডে ৯ এবং পশ্চিমবঙ্গে ৭ স্কুল রয়েছে। ইস্টার্ন কোলফিল্ডের স্কুলগুলিতে বিএড ডিগ্রি প্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা মাসে ৭০০০ টাকা, স্নাতক ডিগ্রি থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকারা মাসে ৫,৫০০ টাকা এবং তার নিচের শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকরা মাসে ৫০০০ টাকা বেতন পান। ইচ্ছা মতো বেতন দেওয়ার অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ৪৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা৷ তাঁদে অভিযোগ, নিজেদের খেয়াল খুশিমতো বেতন দিচ্ছে ইসিএল।
অভিযোগ, কারও ৪ থেকে ৫ মাস কারও আবার ১০ মাস বেতন হয়নি। এমনকী ৭ থেকে ৮ বছর পর্যন্ত বকেয়া রয়েছে বেতন। এই পরিস্থিতিতে ইসিএলের শিক্ষকরা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। মামলা ওঠে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে৷ সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় শিক্ষকদের বেতন না পাওয়ার মামলায় ইস্টার্ন কোলফিল্ড লিমিটেডকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘দেশে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করা হচ্ছে আর শিক্ষকদের এই অবস্থা? টাকা দিয়ে চাইলে স্কুল বন্ধ করে দিন। শিক্ষকদের চোখের জল ফেলবেন না। মামলা করতে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছেন, আর বেতন দিতে পারছেন না? স্কুল চালাতে না পারলে আদানিকে বেচে দিন।”
সপ্তাহখানেকের মধ্যে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা কলকাতা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এই টাকা দিয়ে সব শিক্ষকদের ৫০০০ হাজার টাকা করে ৩ মাসের জন্য মোট ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। আগামী ২১ অগাস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি।