কলকাতা: তৃণমূল থেকে দলে দলে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার যে সাম্প্রতিকতম হিরিক দেখা যাচ্ছে বঙ্গ রাজনীতিতে, ভোটের আগে তা মোটেই স্বস্তিতে রাখছে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে। শাসক শিবিরের এই দুর্বলতার সুযোগকে হাতছাড়া করতে নারাজ বিজেপিও। তৃণমূলের দলীয় অসন্তোষের আঁচ কানে এলেই তাতে ইন্ধন জোগাচ্ছেন পদ্ম শিবিরের নেতারা। এদিন আরও একবার সেই ঘটনার সাক্ষী থাকল বাংলা।
অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের দলবিরোধী মন্তব্যের জেরে শাসক দলের অভ্যন্তরে যে নতুন বিতর্ক দানা বেঁধেছে এদিন সেই সূত্রে ফের আক্রমণ করলেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। দলবদলের ধারা বজায় রেখে শতাব্দী রায়ও কি তবে যোগ দিতে চলেছেন বিজেপিতে? এদিন সাংবাদিকদের সেই প্রশ্নের উত্তরে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘শতাব্দী রায়ের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হবে কি না সেটা পরের কথা। কিন্তু আসল কথা হল, শতাব্দী বুঝেছেন চোর ডাকাত গুন্ডা ছাড়া তৃণমূলে টেকা মুশকিল।’’
শতাব্দী রায়ের অসন্তোষের প্রসঙ্গ টেনে জয়প্রকাশ মজুমদার এদিন আরো বলেন , ‘‘নিজের দলীয় সাংসদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যোগাযোগ করতে পারছেন না দলের মুখপাত্র। এ তো আশ্চর্য ব্যাপার।’’ তৃণমূল দলটা কীভাবে চলছে তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি। জয়প্রকাশ মজুমদার তৃণমূলের কাণ্ডকারখানা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে এদিন আরও বলেছেন, ‘‘শতাব্দীকে বলছে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে! একজন সাংসদ বিধায়কের কাছে যাবেন?’’ তৃণমূলের কাজই মানুষকে নীচে নামানো, বলেছেন তিনি। যদিও, শুক্রবার দুপুরে বিক্ষুব্দ সাংসদ শতাব্দী রায়ের বাড়িতে গিয়ে ‘গল্প’ করে আসেন তৃণমূলের নবনিযুক্ত মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ৷
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শতাব্দী রায়। ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্টে তিনি জানিয়েছেন দীর্ঘ দিন সংসদীয় এলাকায় যেতে পারছেন না তিনি। সেই সঙ্গে দলের বিরুদ্ধে অবজ্ঞার অভিযোগও এনেছেন তিনি। বস্তুত, শতাব্দী রায়ের এই আকস্মিক বিদ্রোহ নিয়ে যারপরনাই বিব্রত শাসক শিবির। তৃণমূল নেতা তথা দমদম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সৌগত রায় এ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন। বোলপুরের পদযাত্রায় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দীর্ঘক্ষণ হাঁটলেও কেন নিজের অসন্তোষের কথা জানান নি শতাব্দী? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। -ফাইল ছবি৷