মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাসের পরেই মেলেনি চাকরি, ফের ধর্নায় হবু শিক্ষকরা

মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাসের পরেই মেলেনি চাকরি, ফের ধর্নায় হবু শিক্ষকরা

কলকাতা:  আজ সরা দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ভাইফোঁটা৷ সকল ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় ফোঁটা দিয়ে থাকেন বোনেরা৷ ভাইফোঁটার এই উৎসবে মুখ্যমন্ত্রীর কাথে বিশেষ আবেদন জানালেন ২০১৬ সালের এস.এল.এস.টি নবম- দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ স্তরের মেধাতালিকাভুক্ত বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা৷ তাঁদের কাতর আবেদন, বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের দিকে যেন তিনি মুখ তুলে তাকান৷ শিক্ষক পদপ্রার্থীরা যেন দীর্ঘ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায়৷ 

আরও পড়ুন- মেলেনি চাকরি, স্বনির্ভরশীল হতে চায়ের দোকান খুললেন ইংরেজিতে এমএ পাস তরুণী

তাঁদের কথায়, ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সাল হয়ে গেল৷ এখনও পর্যন্ত বেকারত্বের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি ঘটল না তাঁদের৷ ২০১৬ সালে এস.এল.এস.টি পরীক্ষা দিয়ে মেধাতালিকা ভুক্ত হওয়ার পরেও তাঁরা বঞ্চিত৷ অভিযোগ, স্কুল সার্ভিস কমিশনের নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ স্তরের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতা রয়েছে৷ গেজেট লঙ্ঘন করা হয়েছে৷  মেধাতালিকার প্রথম দিকে ব়্যাঙ্ক পাওয়া চাকরি প্রার্থীদের বঞ্চিত রেখে পিছনের ব়্যাঙ্কে থাকা প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হয়েছে৷ স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতির জন্যই মেধাতালিকা ভুক্ত হয়েও চাকরিপ্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ।

স্কুল সার্ভিস কমিশন কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বহুবিধ অস্বচ্ছতা, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীগণ ২০১৯ সালে কলকাতার প্রেসক্লাবের সামনে অরাজনৈতিক ভাবে যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের ব্যানারে ২৯ দিন ব্যাপী অনশন করেছিলেন৷ ওই অনশন মঞ্চে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের চাকরির আশ্বাস দিয়েছিলেন৷ বলেছিলেন, মেধাতালিকাভুক্ত চাকরি প্রার্থীদের জন্য ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে আইনের কিছু পরিবর্তন করে বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের নিয়োগের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই আশ্বাসের পরেও কোনও নিয়োগ হয়নি৷ ২০২১ সাল শেষ হতে চলল৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর প্রতুশ্রুতি পালিত হল না৷ চাকরিতে নিয়োগপত্র পেলেন না মেধাতালিকাভুক্তরা। 

মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ২০২১ সালে  দ্বিতীয়বারের জন্য প্রায় ছয় মাস অনশন  করেছিলেন বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীগণ। এর পরে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেছিলেন, মেধাতালিকা ভুক্ত বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের বিষয়টি নিয়ে পজিটিভ ভাবে চিন্তা ভাবনা করা হবে৷ সমস্যা সমাধানের জন্য কমিশন চল্লিশ দিন সময়ও নিয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ও পেরিয়ে গিয়েছে৷ মেধাতালিকা ভুক্ত বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের নিয়োগের ব্যাপারে কোনও রকম উদ্যোগ নেয়নি স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মেধাতালিকাভুক্ত বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীরা গত ৮ অক্টোবর থেকে কলকাতায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের ব্যানারে তৃতীয় বারের জন্য অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্ণায় বসেছেন৷ 

উল্লেখ্য, ৪ নভেম্বর থেকে ৬ নভেম্বর পর়্ন্ত ধর্ণা বন্ধ থাকবে৷ ৭ নভেম্বর থেকে আবার অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্ণা শুরু হবে৷ যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের স্টেট কো- অর্ডিনেটর সুদীপ মন্ডলের আবেদন, নবম-দ্বাদশ স্তরের মেধাতালিকাভুক্ত বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের সকলকেই অতিদ্রুত চাকরিতে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে৷ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের সভাপতি মহিদুল ইসলামের আবেদন,  বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের সমস্যা সমাধানের জন্য সরাসরি হস্তক্ষেপ করে  সমস্যার দ্রুত সমাধান করুন।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − 4 =