কলকাতা: পায়ে চোট পাওয়ার পর থেকে হুইলচেয়ারে চেপেই জেলা সফর শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর থেকে দক্ষিণ, কিংবা পশ্চিম, প্রচার চালাচ্ছেন অবিরাম। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রায় প্রতিটি জনসভা থেকেই অবশ্যম্ভাবী ভাবে আসছে ঢালাও কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি। চাকরির নিয়োগকে প্রচারের হাতিয়ার করেছে গেরুয়া শিবিরও। এমনকি বাম ইস্তেহারেও দেখা গেছে কর্মসংস্থানের বড় আশ্বাস। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সবথেকে বড় ইস্যু যে হয়ে উঠেছে রুটিরুজি, তাতে আর কোনো সন্দেহ নেই।
রাজ্যে তৃণমূল সরকারের আমলে বরাবরই লেগে আছে চাকরিতে নিয়োগের নামে দুর্নীতির অভিযোগ। এসএসসি থেকে টেট, নিয়োগের দাবিতে একাধিক বার পথে নেমেছেন হবু শিক্ষকরা। এমনকি হয়েছে অনশনও। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অবস্থা চিত্রটি খুব একটা বদল হয়নি। নিয়োগ নিয়ে অসন্তোষ জমেছে চিকিৎসক মহলেও। আরো কর্মসংস্থানের বেহাল দশার কঙ্কালসার চেহারা ফুটে উঠেছে করোনাকালে। হাজার হাজার মানুষ হারিয়েছেন কাজ, বেড়েছে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যাও।
এমতাবস্থায় কর্মসংস্থান ইস্যুকে প্রধান হাতিয়ার করে ভোটের ময়দানে লড়াইয়ে নামতে দেরি করেনি বিরোধীরা। মমতা সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপির অন্যতম বড় অভিযোগ, রাজ্যের মানুষকে পেটের টানে ভিন রাজ্যে কাজ করতে ছুটতে হয়। পদ্ম ইস্তেহারে রয়েছে রাজ্যেই ঢালাও কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি। চাকরির ইস্যু যে ভোটের আগে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হয়তো বুঝেছেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমোও। আর তাই জেলায় জেলায় দ্বিগুণ শিক্ষক চিকিৎসক নিয়োগের আশ্বাস দিচ্ছেন তিনি। কিন্তু সরকারের এই সচেতনতা আসতে দেরি হয়ে যায়নি তো? নীল বাড়ির ক্ষমতায় তৃতীয় বার ফিরতে পারবেন তো মমতা? উঠেছে প্রশ্ন।
শুধু নিয়োগ নয়, অশান্তি কিন্তু দানা বেঁধেছে সরকারি চাকুরেদের মাঝেও। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত চালু হয়নি কেন্দ্রীয় সরকারের সপ্তম বেতন কমিশন। ক্ষমতায় এলেই তা চালু করার আশ্বাস দিয়েছেন অমিত শাহ। সব মিলিয়ে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি পারবেন হ্যাটট্রিক করতে? নাকি নীল বাড়িতে হাওয়াই চটির পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে কর্মসংস্থান ইস্যু? উত্তর মিলবে ২ মে।