কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ‘ইন্ট্রো’র নামে যাদবপুরের বাংলা বিভাগের ওই পড়ুয়াকে ঘোরানো হয়েছিল সিনিয়রদের ঘরে ঘরে৷ সেই সঙ্গে চলে মানসিক নির্যাতন৷ করা হয়েছিল কুরুচিকর প্রশ্ন৷ পরে একটি রুমে নিয়ে গিয়ে তার সমস্ত পোশাক খোলানো হয়। রাত তখন প্রায় সাড়ে ১১টা৷ এর ১৫ মিনিট পরই মেন হোস্টেলের নীচ থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই পড়ুয়া দেহ।
ওই দিন রাত সাড়ে ১১টা থেকে পৌনে ১২টার মধ্যে ঠিক কী কী হয়েছিল, সেটাই জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। তদন্তকারীদের অনুমান, এই ১৫ মিনিটেই লুকিয়ে রয়েছে প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রের মৃত্যুর রহস্য। এই ১৫ মিনিটে ঠিক কী কী ঘটেছিল তা জানতে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ৷ কাদের ইন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ব়্যাগিংয়ের মতো ঘৃণ্য অপরাধ ঘটত, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন পড়ুয়া সহ মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ প্রথম গ্রেফতার করা হয় আবাসিকের বাসিন্দা তথা প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে৷৷ এর পর প্রাক্তন ও বর্তমান মিলেয়ে গ্রেফতার হন দীপশেখর দত্ত, মহম্মদ আরিফ, মহম্মদ আসিফ আফজল আনসারি, অঙ্কন সরকার, অসিত সর্দার, সপ্তক কামিল্যা, মনোতোষ ঘোষ, সুমন নস্কর। দুজন অভিযুক্ত পলাতক।
পুলিশের দাবি, ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার পরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে পর পর জেনারেল বডির বৈঠক হয়। ধৃত সৌরভ চৌধুরী সহ বাকি অভিযুক্তরা সেখানেই উপস্থিত ছিল। তবে ওই বৈঠকের নির্যাস তদন্তকারীদের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে হস্টেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীরা যে রীতিমতো দাদাগিড়ি চালাত, সেই অভিযোগ বহু পুরনো। প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের দিয়ে নানা রকম ফাই ফরমায়েশ খাটায় তাঁরা। চলে নানা রকম নির্যাতন৷ শিশু কমিশনের দাবি, সুপার নিজেই নাকি মেন হস্টেলে ঢুকতে ভয় পেতেন। এই আবহে যাদবপুরকাণ্ডে আজ বৈঠকে বসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি৷