রোম: ইতালির করোনা আক্রান্তদের মৃত্যুর সংখ্যা এবার চীনকে ছাপিয়ে গেল। বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় ইতালিতে করোনা আক্রান্ত ৪২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে এপর্যন্ত ইউরোপের এই দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩,৪০৫। জনস হপকিন ইউনিভার্সিটির ভাইরাস ম্যাপ অনুসারে এই একই দিনে মহামারীর কেন্দ্রস্থল চীনের উহান শহরকে ছাড়িয়ে ভয়ঙ্কর মাইলফলক তৈরী করেছে ইতালি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চীনে মৃতের সংখ্যা ছিল মোট ৩,২৪৯৮জন। অর্থাৎ ইতালির তুলনায় ১৫৬ জন কম।
গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫,৩২২ জন। এনিয়ে ইতালিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১,০৩৫ জন। যা গোটা বিশ্বে মোট আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি। ইতালির নাগরিক সুরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইতালিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ১৪.৯ % হারে, যা বিগত তিনদিনের মধ্যে সর্বোচ্চ।
স্পেনের এপি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ইতালির এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য বিশেষজ্ঞরা একাধিক কারণ উল্লেখ করেছেন। মূলত, ইতালিতে বর্ষীয়ান নাগরিকদের সংখ্যা বেশি,তাদের মধ্যে এই সংক্রমণ দ্রুতহারে বৃদ্ধি পায়। যদিও মারাত্মক সংক্রামণের ফলে অল্পবয়সীদেরও মৃত্যু হয়েছে। প্রসঙ্গত, ইতালি বিশ্বের সর্বোচ্চ বর্ষীয়ান জনসংখ্যার হারে দ্বিতীয়। তাঁর মধ্যে সর্বাধিক ৮৭ শতাংশ হারে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
ফার্স্টস্পট সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুসারে জার্মানির বার্নহার্ড নোচট ইনস্টিটিউট ফর ট্রপিকাল মেডিসিনের ভাইরোলজিস্ট জোনাস শ্মিথ-চানাসিট বলেছেন, কারণ ব্যাখ্যা করতে হলে, ইতালির বেশকয়েকটি অঞ্চলে সম্পূর্ণ ভগ্নপ্রায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য এখানে মৃত্যুর হার বেড়ে চলেছে।
চীনের রেডক্রশ সংস্থার দাবি ইতালি এখনও সম্পূর্ণভাবে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করতে পারেনি এবং তাদের জাতীয় লকডাউনের বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। মিলান শহর পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা থেকে চীনের রেডক্রশ দলের প্রতিনিধিদের বক্তব্য, এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও সেখানে বহু মানুষ স্বভাবিকভাবেই রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করছেন, রাস্তাঘাটে খাওয়া দাওয়া করছেন এমনকি হোটেলে গিয়ে পার্টিতেও রোগ দিচ্ছেন।
রেডক্রশের এক প্রতিনিধি বলেন চীনের উড়ানে বাধ্যতামূলকভাবে লকডাউনের একমাস পর থেকে করোনা সংক্রামন নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তাই তাঁর মতে এই মুহূর্তে ইতালির জনসাধারণের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে। রাস্তায় ঘোরাফেরা বন্ধ করে ঘরবন্দি হয়ে থাকতে হবে। অন্যদিকে, ইরানের করোনা পরিস্থিতিও জটিল হয়ে উঠছে। সেখানে প্রতি ১০ মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। প্রতিঘন্টায় সেখানে ১০জন করে সংক্রমিত হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইরানে এপর্যন্ত করোনার বলি হয়েছেন ১,২০০জন। আক্রান্ত কমপক্ষে ১৮,৫০০ জন।