চাঁদের মাটি আনতে মহাকাশে পাড়ি দেবে চন্দ্রযান ৪! চলছে ‘স্পেস ডকিং’ প্রস্তুতি, ঘোষণা ইসরোর

কলকাতা: ২০২৩ সালের ২৩ অগাস্ট। সারা বিশ্বকে চমকে দিয় ইসরোর মুকুটে জুড়েছিল সাফল্যের সোনালী পালক৷ ওই দিন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করে ইসরোর তৈরি…

কলকাতা: ২০২৩ সালের ২৩ অগাস্ট। সারা বিশ্বকে চমকে দিয় ইসরোর মুকুটে জুড়েছিল সাফল্যের সোনালী পালক৷ ওই দিন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করে ইসরোর তৈরি মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩৷ সম্প্রতি চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে চিনের চন্দ্রযান৷ শুধু তাই নয়, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর অদেখা অঞ্চল থেকে মাটি ও পাথর নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে চ্যাঙ্গি–৬৷ এর দু’দিন কাটতে না কাটতেই চন্দ্রযান ৪ মিশন নিয়ে বড় আপডেট সামনে আনল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা৷  ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে ইতিমধ্যেই সফল ভাবে অবতরণ করেছে চন্দ্রযান ৩৷ এবার চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আনার জন্য পৃথিবীর আত্মজার পথে পাড়ি দেবে চন্দ্রযান ৪। প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে৷  চলতি বছরের শেষের দিকেই সম্ভবত একটি স্পেস ডকিং (স্প্যাডেক্স) পরীক্ষা করা হবে।

ইসরো সূত্রে খবর, মূলত দুটি ধাপে চন্দ্রযান-৪ এর উৎক্ষেপণ করা হবে। এই উৎক্ষেপণে দু’টি ভিন্ন পথে দুটি মিনি স্যাটেলাইট পাঠানো হবে৷ প্রথম ক্ষেত্রে এলভিএম-৩ এবং দ্বিতীয় ক্ষেত্রে পিএসএলভি-র সাহায্য নেওয়া হবে। চন্দ্রযান-৪-এ কোনও একটি নয়, বরং পাঁচ পাঁচটি পৃথক মহাকাশযান থাকবে৷ সেগুলির প্রত্যেকটির কাজও হবে ভিন্ন৷ এই পাঁচটি অংশ হল- প্রোপালশন মডিউল, ডিসেন্ডার মডিউল, অ্যাসেন্ডার মডিউল, ট্রান্সফার মডিউল এবং রিএন্ট্রি মডিউল।

 

চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের পর চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরে আসবে ভারতের চন্দ্রযান। ইসরো প্রধান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, চন্দ্রযান-৪-এর মূলত পাঁচটি অংশ থাকবে। সেগুলি হল- প্রোপালশন মডিউল, ডিসেন্ডার মডিউল, অ্যাসেন্ডার মডিউল, ট্রান্সফার মডিউল এবং রিএন্ট্রি মডিউল। পাঁচটি অংশ সমন্বিত চন্দ্রযান-৪-এর উৎক্ষেপণ দু’টি পৃথক পর্যায়ে করা হবে৷

 

বুধবার নয়াদিল্লিতে ইন্ডিয়া স্পেস কংগ্রেসের তরফে ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ বলেন, ‘আমরা চন্দ্রযান-৪ এর কনফিগারেশন এবং কীভাবে চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে আনা যায়, সেই বিষয়ে পরিকল্পনা করেছি। সব দিক পর্যালোচনার পরই এই মিশন অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। আমরা একাধিক লঞ্চিংয়ের কথা মাথায় রেখেই প্রস্তাব করেছি। কারণ আমাদের হাতে যে সব রকেট আছে, তা একটি মিশনে গিয়ে ফিরে আসার জন্য সম্পূর্ণ সক্ষম নয়। তাই আমাদের স্পেস ডকিং বা স্প্যাডেক্স এর সাহায্য নিতে হবে।’

এখন প্রশ্ন হল এই স্পেস ডকিং কী?

সহজ ভাবে বলতে গেলে, দু’টি পৃথক মহাকাশযানের একে অপরকে খুঁজে পাওয়া এবং একই কক্ষপথে স্টেশন হওয়াকেই বলে স্পেস ডকিং। ১৯৬৬ সালে  আমেরিকার জেমিনি প্রজেক্টে প্রথমবার স্পেস ডকিং হয়েছিল। মহাকাশচারী নীল আর্মস্ট্রং এবং ডেভিড স্কট ছিলেন জেমিনি ৮ মহাকাশযানের সওয়ারি। মানববিহীন এজেনা টার্গেট যানের সঙ্গে স্পেশ ডক করেছিল জেমিনি ৮।

 

 

মূলত চন্দ্রযান-৩-এর কৃতিত্বের উপর ভিত্তি করে আরও জটিল সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে চন্দ্রযান-৪৷ এই মিশন সফল হলে ভারতই হবে চতুর্থ দেশ যারা চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে সফল ভাবে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীর বুকে বয়ে আনবে৷ এই সাফল্যের শিরোপা মাথায় তুলতে মরিয়া ইসরো৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *