প্রতিকূলতা এড়িয়ে কোথায় অবতরণ চন্দ্রযানের? নিরাপদ জায়গা খুঁজছে বিক্রম, ছবি শেয়ার ইসরোর

প্রতিকূলতা এড়িয়ে কোথায় অবতরণ চন্দ্রযানের? নিরাপদ জায়গা খুঁজছে বিক্রম, ছবি শেয়ার ইসরোর

বেঙ্গালুরু: মহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় প্রহর গুণছে দেশবাসী৷ চন্দ্রবিজয়ের অপেক্ষায় গোটা দেশ৷ চাঁদের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তৈরি চন্দ্রযান-৩৷ এক কথা চাঁদের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে ল্যান্ডার বিক্রম। হিসাব মিলে গেলে আগামী বুধবার ভারতীয় সময় অনুযায়ী  সন্ধ্যা ৬টা বেজে ৪ মিনিটে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার কথা তার। কিন্তু ঠিক কোথায় পা রাখবে বিক্রম? কারণ অন্ধকারে ঢাকা চাঁদের দক্ষিণ মেরু বেশ দুর্গম৷ চারিদিক খানাখন্দে ভরা৷ এদিকে, চাঁদের  মাটি ছোঁয়ার জন্য বিক্রমের প্রয়োজন অপেক্ষাকৃত মসৃণ জমি। আপাতত তারই সন্ধানেই রয়েছে ইসরো। 

সোমবার সকালে বেশ কয়েকটি ছবি শেয়ার করেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা৷ চাঁদের বুকে নামার আগে ঘুরপাক খেতে খেতে নিরাপদ অবতরণের স্থান খুঁজছে বিক্রম। তার ক্যামেরায় ধরা পড়া ছবিগুলিই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাগ করে নিয়েছে ইসরো।

 

 

টুইটে লেখা হয়েছে, ‘‘এগুলি চাঁদের বেশ কিছুটা দূরের দিকের ছবি। বিক্রমের মধ্যেকার ল্যান্ডার হ্যাজার্ড ডিটেকশন অ্যান্ড অ্যাভয়েড্যান্স ক্যামেরা (এলএইচডিএসি) দিয়ে এই ছবিগুলি তোলা হয়েছে। এই বিশেষ ক্যামেরাই চাঁদের মাটিতে অবতরণের জন্য নিরাপদ স্থান খুঁজতে সাহায্য করছে।’’

চাঁদের জমি নুড়ি-কাঁকড়ে ভরা৷ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পাথর৷ রয়েছে অনেক গর্ত৷ তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকটি বেশ বড়। রয়েছে উঁচু উঁচু ঢিবিও৷ যা তৃতীয় চন্দ্রযানের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে৷ সেই সব পাথর, গর্ত এড়িয়ে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা স্থান চিহ্নিত করাই ইসরোর বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক লক্ষ্য৷ নিরাপদ স্থান খুঁজে পেলেই নামানো হবে বিক্রমকে৷ 

রোভার প্রজ্ঞানকে পেটের ভিতর নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় পাখির পালকের মতো চাঁদের পিঠে সফট ল্যান্ডিং করবে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। চন্দ্র অভিযানের এই পর্যায়টিই সবচেয়ে কঠিন৷ কারণ, এর আগের বার ঠিক এই পর্যায়েই ব্যর্থ হয়েছিল চন্দ্রযান-২। বড়সড় বিপত্তি না ঘটলে এবার ইসরোর মুকুটে জুড়বে সাফল্যের নতুন পালক৷ 

চাঁদের দক্ষিণ মেরু জয় রীতিমতো চ্যালেঞ্জের৷ কারণ ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঢাকা দক্ষিণ মেরুতে প্রতিপদে রয়েছে প্রতিকূলতা৷ চাঁদের এই অংশে সূর্যের আলো পৌঁছয় না। এই অংশের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ২৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত নীচে নেমে যায়। আপাদমস্তক বরফে ঢাকা। এত প্রবল ঠাণ্ডায় অনেক সময় বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতিও বিগড়ে যায়। তার উপর রয়েছে বিশাল বিশাল কিছু খাদ৷ কোনও কোনও  খাদের গভীরতা আবার হাজার কিলোমিটারেরও বেশি। টিমটিম করছে আলো৷ ফলে এই প্রতিকূলতার মধ্যে উন্নত প্রযুক্তির মহাকাশযানও অনেক সময় খেই হারিয়ে ফেলে৷ 

বিজ্ঞানীদের ধারণা, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটি যদি রোবটের সাহায্যে খোঁড়া যায়, তাহলে বেরিয়ে আসতে পারে তরল জল৷ আবার এই অংশে রয়েছে বেশ কিছু উঁচু পর্বত৷ সেগুলির চূড়া সর্ব ক্ষণ সূর্যের আলোকে আলোকিত থাকে। যা সৌরশক্তির বণ্টনে ব্যবহার করা যেতেই পারে। 

 
 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 − two =