adhir
নিজস্ব প্রতিনিধি: টানা পাঁচবার বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয় পেয়েছেন অধীর চৌধুরী। অর্থাৎ এবার তিনি ডাবল হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে। গত বিধানসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বহরমপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছেন অধীর। যদিও বিধানসভা আর লোকসভা ভোটের অঙ্ক এক নয়। তা সত্ত্বেও সেই ফ্যাক্টরকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত যদি কংগ্রেসের সত্যিই জোট হয় তাহলে অধীরের সমস্যা আরও বাড়তে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে। সেক্ষেত্রে কি সমস্যা দেখা দিতে পারে?
গত কয়েক বছরে অধীরের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে কংগ্রেস ছেড়ে একের পর এক নেতা তৃণমূলে যোগদান করেছেন। আর অধীর চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবল বিরোধী বলে পরিচিত। সবচেয়ে বড় কথা মমতা যখন কংগ্রেসে ছিলেন তখনও অধীরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক একেবারেই মসৃণ ছিল না। সেই সূত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হলে তৃণমূল সমর্থকদের ভোট তখন অধীরের দিকে আসবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে অধীরকে হারাতে তৃণমূলের একাংশ উঠে পড়ে লাগবে না তো? অধীরকে হারাতে সেই অংশের ভোট বিজেপি, বা অন্য কোনও নির্দল প্রার্থী এমনকী নোটাতেও চলে যাবে না তো? এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদি সেটা হয় সেক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে সুবিধা পাবে বিজেপি। এমনিতেই বিধানসভা নির্বাচনে বহরমপুর কেন্দ্র থেকে বিজেপি জয়লাভ করেছিল। তাই এই সমীকরণ নিঃসন্দেহে ভাবাচ্ছে অধীর তথা কংগ্রেসকে।
ঘটনা হল জোট নিয়ে যখন কংগ্রেস হাইকমান্ড পজিটিভ কথা বলছেন তখনও কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করে চলেছেন অধীর। বারবার দাবি করছেন তৃণমূলের সঙ্গে জোট করার প্রয়োজন নেই কংগ্রেসের। অধীরের আরও দাবি আসলে তৃণমূলই নিজেদের সুবিধার জন্য পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে চাইছে। এই চাপানউতোর বহুদিন ধরেই চলছে। অর্থাৎ শেষ পর্যন্ত জোট হলেও কট্টর তৃণমূল সমর্থকরা আদৌ অধীরকে ভোট দেবেন কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তাই পশ্চিমবঙ্গে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে জোট হয় কিনা তার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে। যদিও অধীর বারবার দাবি করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহরমপুর কেন্দ্রে দাঁড়ালেও তাঁকে হারাতে পারবেন না। নিজের জয় নিয়ে এতটাই আত্মবিশ্বাসী বহরমপুরের ‘রবিনহুড’। তা সত্ত্বেও জোট হলে তৃণমূলের আন্তরিক সমর্থন তিনি কতটা পাবেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।