কলকাতা: রোজকার একঘেঁয়ে জীবনের ক্লান্তি ঘোঁচাতে মাঝে মধ্যেই বাক্স প্যাটরা বেঁধে বেরিয়ে পড়েন ভ্রমণ পিপাসু মানুষ৷ কেউ রাজ্য বা দেশের মধ্যেই স্বচ্ছন্দ্য৷ কারও আবার পছন্দ বিদেশ বিভুঁই৷ সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে অজানা অচেনা দেশে ঘুরতে যাওয়াটা অনেকের কাছেই রোমাঞ্চের৷
নতুন দেশ, নতুন জায়গা, নতুন মানুষ, নতুন সংস্কৃতি, নতুন নতুন খাবার দাবার, নানা আকার্ষণীয় স্থান, এ সবের প্রতি অনেকেরই দুর্বার আকর্ষণ। কিন্তু অধিকাংশ মানুষের পক্ষেই বিদেশ সফর সম্ভব হয়ে ওঠে না৷ টান ধরে পকেটে৷ তাই বিদেশ সফরটা স্বপ্নই থেকে যায়। কিন্তু এমন যদি কোনও দেশে হয়, যেখানে গেলে খরচ নয়, উলটে হয় লাভ, তাহলে? ভাবছেন এ আবার কোন দেশ? তাহলে বলি, হ্যাঁ, এমনও দেশ রয়েছে, যেখানে বেড়াতে গেলেই মিলবে টাকা, বাড়ি, বিলাসবহুল জীবন, এমনকি নাগরিকত্ব৷ যাবেন নাকি সেখানে?
দেশটির নাম আয়ারল্যান্ড। ইউরোপ মহাদেশের বরফে ঢাকা একটি ছোট্টো দ্বীপ রাষ্ট্র। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের এই দ্বীপ রাষ্ট্রে লোকসংখ্যা খুবই নগন্য। এখন তাঁদের একটাই লক্ষ্য, কী ভাবে জনসংখ্যা বাড়ানো যায়৷ বিদেশিরা যাতে এখানে এসে বসতি স্থাপন করেন, তাই দারুণ অফার এনেছে আয়ারল্যান্ড সরকার। এই দ্বীপে এসে বসবাস করলেই মিলবে ৭১ লক্ষ টাকা। আর কী কী পরিকল্পনা রয়েছে? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ইউরো নিউজ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই পরিকল্পনাটি হল সেদেশের “আর লিভিং আইল্যান্ড” নীতির অংশ। এর নীতির হাত ধরে আইরিশ সরকার তার দ্বীপগুলিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কৌশল নিয়েছে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, “এই নীতির উদ্দেশ্য হল এখানকার দ্বীপগুলিকে সমৃদ্ধ করা। এই পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৩০টি দ্বীপ। এই দ্বীপগুলি একে অপরের সঙ্গে কোনও সেতু দ্বারা সংযুক্ত নয়৷ এই দ্বীপগুলির কাছাকাছি কোনও উপকূলও নেই। সরকার এখানে নতুন বাসিন্দাদের বসতি স্থাপনের সুযোগ দিচ্ছে। এবং এখানে বসতি স্থপনে আগ্রহী ব্যক্তিদের হাতে ৭১ লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল, দ্বীপগুলির পরিত্যক্ত প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার এবং পুনর্বাসন।’’
এখানে থাকতে গেলে কী করতে হবে?
আয়ারল্যান্ডের এই দ্বীপগুলিতে থাকতে গেলে বাসিন্দাদের সবার আগে একটি সম্পত্তি কিনতে হবে। তবে সেখানেও রয়েছে ছোট্ট একটি শর্ত৷ প্রথমত ওই সম্পত্তি ১৯৯৩ সালের আগে নির্মিত হতে হবে এবং সেটি যেন কমপক্ষে দু’বছর ধরে খালি পড়ে থাকে। এই প্রকল্পের অধীনে প্রদত্ত অর্থ গৃহ নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই টাকা মূলত দেওয়া হবে সংস্করণ, কাঠামোগত উন্নতি এবং সজ্জার জন্য। কেউ যদি এই দ্বীপগুলির নাগরিকত্ব পেতে চান, তাহলে চটপট আবেদন করুন। আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে ১ জুলাই থেকে।
কেউ যদি শুধুমাত্র আয়ারল্যান্ড ভ্রমণের পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে জুন, জুলাই এবং অগাস্টই সেরা সময়। শীতকালে আয়ারল্যান্ড দেখতে চাইলে যেতে হবে জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ৷ আর আয়ারল্যান্ডের বসন্ত দেখতে চাইলে সেরা এপ্রিল মাস৷