কলকাতা: হুমকির জন্যই সল্টলেকের বাড়িতে থাকতে পারেননি৷ তবে আত্মসম্মান আছে৷ তাই খেতে পাবেন না, তাও বলবেন না৷ বুদ্ধদেব-মীরা ভট্টাচার্যকে শ্রদ্ধা করেন৷ ওঁদের সঙ্গে যোগাযোগও আছে৷ কিন্তু প্রয়োজন পড়লে আবার রাস্তায় থাকবেন তিনি৷ লুম্বিনি মেন্টাল হাসপাতাল থেকে খড়দার বাড়িতে ফিরে বিস্ফোরক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শ্যালিকা ইরা বসু৷
আরও পড়ুন- হঠাৎ পদত্যাগ কেন অর্পিতার? বিস্ফোরক ‘কারণ’ দেখালেন দিলীপ
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শ্যালিকার জীবন কাটছিল ফুটপাতে৷ সেখানেই এক কোনে মাথা গুড়েছিলেন তিনি৷ এই খবরটি প্রকাশ্যে আসাতেই শোরগোল পড়ে যায়৷ এক সময়ের স্কুল শিক্ষিকা হয়ে কেন এই জীবন বেছে নিলেন তিনি? জবাবে, ইরাদেবী সাফ বলেন, ‘‘এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়৷ এর উত্তর আমি দেব না৷ দরকারে আবার থাকব৷ আমার নিজের বাড়ি রয়েছে৷ মীরা ভট্টাচার্য ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কে, সে বিষয়ে মীরা ভট্টাচার্য নিয়েই বিবৃতি দিয়েছে৷ ওটাই শেষ কথা৷’’
তাঁর কথায়, করোনার জন্য কেউ বাড়ি ভাড়া দিচ্ছিল না৷ বাড়ি না পেলে কোথায় থাকব? কিন্তু সল্টলেকে তো নিজের বাড়ি রয়েছে তাঁর৷ কেন থাকছেন না সল্টলেকের বাড়িতে? জবাবে ইরা বসু বলেন, ‘‘ওখানে থাকতে পারলে কী আর থাকতাম না? আমি কখনও বলিনি যে আমার বাড়িতে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু আমাকে এত অত্যাচার করা হয়েছে যে থাকতে পারিনি৷ কে বা কারা করেছে আমি জানি না৷ বলতেও চাই না৷ তবে আমাকে বারেবারে বলা হয়েছে, আপনি এখানে থাকলে প্রাণে মারা হবে৷ তার পরে কেউ ওই বাড়িতে থাকে নাকি?’’ তিনি জানান সল্টলেক বিবি ব্লকের বাড়িটা তাঁর নিজের নামেই রয়েছে৷ তবে ২০১৪ সাল থেকে ওই বাড়িতে থাকেন না তিনি৷
ইরা বসু আরও বলেন, ‘‘এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও অনেক লোক রাস্তায় থাকত৷ ১৯৭৩ সালে উনি এখানে এসেছেন৷ কে কোন প্রয়োজনে রাস্তায় থাকে তা কেউ জানে না৷ সে যদি বাজে কাজ না করে বা বাজে এলাকায় (রেড লাইট এরিয়া) না থাকে তাহলে অসুবিধা কোথায়? ইরাদেবী জানান, প্রথম ৬ মাস তিনি সবেদা বাগানে ছিলেন এক আত্মীয়ের বাড়ি৷ তাঁরা কানাডায় চলে যাওয়ার পর তিনি ডানলপে চলে আসেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ব্যারাকপুর কমিশনারেটের রামবাবু যিনি আমাকে ধরে নিয়ে গিয়েছেন উনি ২ বছর ধরে আমাকে দেখছেন৷ তিনি এবং বেলঘড়িয়ার ডিআইজি প্রায়ই ১০টার সময় আসতেন৷ তাঁদের অনেক দিন বলেছি একটা বাড়ি খুঁজে দেওয়ার জন্য৷ আইন মেনে ১১ মাসের টাকা দিয়ে বাড়িতে ঢুকব৷ কিন্তু তাঁরা কোনও ব্যবস্থা করেননি৷’’
আরও পড়ুন- TIME-এর বিশ্বের ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তালিকায় মমতা!
এদিকে, চাকরি করলেও এখনও পেনশন চালু হয়নি ইরা বসুর৷ তিনি জানান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে তাঁর কাছে লোক পাঠিয়েছিলেন৷ সব কিছু শুনে তাঁরা দ্রুত পেনশনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক উঁছু জায়গায় আছেন৷ আশা করি তাঁর লোকজন মিথ্যে কথা বলবে না৷ তবে ইরা বসুর একটাই কথায়, ‘‘আমার আত্মসম্মান আছে৷ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আমার যেই হন না কেন, আমি তাঁর কাছে কখনও কোনও কথা বলিনি৷ কেন পেনসন হয়নি সে বিষয়ে বলতে পারবে তদানীন্তন ডিআই৷ তবে আবার খড়দায় থাকব এভং এখানে থেকে ফের ছাত্রদের পড়াব৷