কলকাতা: আনন্দপুর কাণ্ডের ২ দিন পর আজ ফের তলব নির্যাতিতাকে৷ অভিযুক্তের সঙ্গে ৫ বছরের সম্পর্ক ছিল, তবুও সে কথা চেপে গিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ উঠেছে নির্যাতিতার বিরুদ্ধে। এমনকি নির্যাতিতা অভিযুক্তের নামও পুলিশকে জেরার সময় বদলে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন অভিযুক্তের নাম অমিতাভ বসু কিন্তু আদতে তাঁর নাম অভিষেক পান্ডে। যদিও এখনও অধরা অভিযুক্ত। তাঁর খোজ চালাচ্ছে আনন্দপুর থানার পুলিশ৷ অন্যদিকে, নির্যাতিতাকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা উন্নতি হয়েছে৷ অস্ত্রোপচার সফল হলেও ৬ মাস হাঁটাচলা করতে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের মোবাইল বন্ধ থাকায়, সারারাত ধরে খুঁজেও হদিস মেলেনি তাঁর। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বছর তিনেক আগে অভিযুক্ত অভিষেক পান্ডের বিয়ে হয়েছিল। তারপর বিবাহ বিচ্ছেদও ঘটে। জানা গিয়েছে, স্ত্রীয়ের ওপর নির্যাতন চালাতেন অভিষেক। প্রায় রোজ বাড়িতে অন্য মহিলাদের নিয়ে এসে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতেন অভিযুক্ত। পুলিশ আরও জানায়, অভিযুক্তের স্ত্রীয়ের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের আগে থেকেই আনন্দপুর কাণ্ডের নির্যাতিতা তরুনীকে চিনতেন তিনি।
গত শনিবার রাত ৮টা নাগাদ ওই তরুণীকে গাড়িতে নিয়ে ঘুরতে বেরোন অভিযুক্ত। পাঁটুলির একটি রেস্তোরাঁয় যান তাঁরা প্রথমে। তারপর বাইপাসের আশেপাশে কিছুক্ষণ সময় কাটান দু’জনে। এরপর অজয়নগর, গড়িয়া, কালিকাপুর ঘুরে চলে আসেন আনন্দনগর। তরুণীর কথায়, নয়াবাদে বাড়িতে ছাড়ার জন্য অনুরোধ করায় অভিযুক্ত চৌবাঘার দিকে গাড়ি ঘোরাবার চেষ্টা করেন। এরপর বাধা দিতে গেলে গাড়িতেই তরুণীকে মারধর শুরু করেন অভিযুক্ত। এই ঘটনায় ওই নির্যাতিতাকে বাঁচাতে গিয়ে অন্য এক মহিলা নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায় গুরুতর জখম হন। অস্ত্রপচারের পর চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন বর্তমানে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
পুলিশকে ঘটনা জানালে তৎক্ষনাৎ তদন্ত শুরু করে দেন তাঁরা। পাঁটুলির রেস্তোরাঁয় গিয়ে সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ, পাশাপাশি রেস্তোরাঁর ম্যানেজারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। বাইপাসের যে সমস্ত সিগনালে অভিযুক্তর গাড়ি থেমেছিল সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখে পুলিশ গাড়ির নম্বর ট্রেস করে। এরপর গাড়িটিকে আটক করতে পারলেও অভিযুক্তর খোঁজ এখনও পায়নি পুলিশ। নির্যাতিতা প্রাথমিক তদন্তে জানায়, ওই অভিযুক্তকে তিনি চিনতেন না সেভাবে। অভিযুক্তের নাম জিজ্ঞেস করায় তরুণী জানান, তভিযুক্তের নাম অমিতাভ বসু। কিন্তু পুলিশ জানতে পারে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে নির্যাতিতা পরিচিত ছিল অভিযুক্তের। আবার অভিযুক্তের আসল নাম যে অমিতাভ নয় অভিষেক পান্ডে তা জানার পাশাপাশি পুলিশ জানতে পারে এঁরা দুজনে একসময় একসঙ্গে কাজও করতেন। পাশাপাশি পুলিশ আরও জানিয়েছে অভিযুক্ত অভিষেকের বাড়ি পূর্ব যাদবপুরে।