বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার থেকেও পিছিয়ে ১১১ নম্বরে ভারত, রিপোর্ট খারিজ কেন্দ্রের

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার থেকেও পিছিয়ে ১১১ নম্বরে ভারত, রিপোর্ট খারিজ কেন্দ্রের

India Ranks

নয়াদিল্লি:  ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়৷ কবির কলম থেকে ঝরে পড়া উক্তি যেন বাস্তবের প্রতিফলন৷ চকচক করা পর্দার আড়ালে ভারতের বাস্তবিক চেহারা খনিকটা এমনটাই৷ যেখানে আজও ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদতে হয় মানুষকে৷ এই ছবি আরও স্পষ্ট হয়েছে বিশ্ব ক্ষুধা সূচক ‘গ্লোবাল হাংগার ইনডেক্স’-এর তালিকায়৷ যেখানে আরও পতন ঘটেছে ভারতের৷ ১২৫টি দেশের মধ্যে ১১১-তম স্থান পেয়েছে আমাদের দেশ। ২০২২ সালে ‘গ্লোবাল হাংগার ইনডেক্স’-এ ভারতের স্থান ছিল ১০৭ নম্বরে। চলতি বছর আরও চার ধাপ পিছিয়ে গিয়েছে। ভারতের প্রাপ্ত নম্বর ২৮.৭। যার অর্থ, এদেশে অনাহারে থাকা মানুষের সংখ্যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ভারতে অপুষ্টির হারও ১৬.৬ শতাংশ। সূচক অনুযায়ী, অনূর্ধ্ব পাঁচ বছরের শিশুদের মৃত্যুর হার ৩.১ শতাংশ৷ ক্ষুধার নিরিখে পড়শি দেশ পাকিস্তান (১০২), বাংলাদেশ (৮১), নেপাল (৬৯) এবং শ্রীলঙ্কার (৬০) চেয়েও পিছনে চলে গিয়েছে ভারত৷ 

সূচকে আরও বলা হয়েছে, অপুষ্টিতে ভোগা, বয়স অনুযায়ী উচ্চতা এবং ওজনের মধ্যে ভারসাম্যহীন শিশুর হার ১৮.৭ শতাংশ। যা বিশ্বে সর্বোচ্চ৷ এর মাধ‌্যমেই বোঝা যায়, এই দেশে শিশুদের অপুষ্টির হার কতটা মারাত্মক। অন্যদিকে, ভারতে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সি মহিলাদের মধ্যে রক্তাল্পতার শিকার ৫৮.১ শতাংশ ৷ যদিও বৃহস্পতিবার ‘গ্লোবাল হাংগার ইনডেক্স’ প্রকাশিত হওয়ার পরেই তাকে ‘পদ্ধতিগত ভাবে ত্রুটিযুক্ত’ এবং ‘দুরভিসন্ধিমূলক’ বলে খারিজ করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক। মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, শিশু-স্বাস্থ্যের অবস্থা কেমন, তা গণনার জন‌্য চারটি মাপকাঠির মধ্যে যে তিনটি এক্ষেত্রে ব‌্যবহার করা হয়েছে, তা দিয়ে কখনই গোটা দেশের মানুষের ক্ষুধাসূচক নির্ণয় করা যায় না। এটি ভুল। সরকারি ‘পোষণ ট্র্যাকার’ এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এ দেশে শিশুদের অপুষ্টির হার একটানা ৭.২ শতাংশের নীচে রয়েছে। এদিকে, কেন্দ্র বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের রিপোর্ট এড়াতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক সংঘাত৷ মোদী সরকার ‘দায় এড়াতেই’  ঝাঁপিয়ে পড়েছে কংগ্রেস৷ 

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনাহারে দিন কাটছে অসংখ্য মানুষের৷ তাদের অপুষ্টির হার কত, শিশুমৃত্যুর হার কত, মহিলাদের স্বাস্থ্য কোন জায়গায়, তার সামগ্রিক চিত্রও তুলে ধরে বিশ্ব ক্ষুধা সূচক। এক্ষেত্রে রয়েছে ০ থেকে ১০০-র মাপকাঠি৷ কোনও দেশ ০ পেলে, বুঝতে হবে, সেই দেশে অনাহার, অপুষ্টির সমস্যা নেই। সংখ্যা যত বাড়বে, বুঝতে হবে পরিস্থিতি ততই খারাপ। সেই নিরিখে আফগানিস্তান, ইয়েমেন, হাইতির মতো দেশের থেকে উপরে রয়েছে ভারত৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − seven =