করোনা রুখতে ভারতকে ৫ জরুরি নির্দেশ ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের

করোনা রুখতে ভারতকে ৫ জরুরি নির্দেশ ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের

ওয়াশিংটন:  সোমবার নবান্নে করোনা নিয়ে বৈঠকের পর রাজ্যের সতর্কতামূলক বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি একটি উল্লেখযোগ্য তথ্য তুলে ধরেছিলেন যেখানে ভারত সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিতে প্রথম দিন দু-একজনের করোনা সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে আসার পর একসপ্তাহের মধ্যেই কিভাবে কয়েক গুণ হারে তা ছড়িয়ে পড়ছে। সঠিকভাবে রোগটিকে চিহ্নিত করতে কি পদ্ধতিগত কোনো ভুল হচ্ছে?

বিশেষজ্ঞরাও ঠিক এই বিষয়টিকেই গুরুত্ব দিতে চাইছেন। তাদের দাবি কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ রুখতে কয়েকটি  ভুল পদক্ষেপ করছে ভারত। তাঁরা সতর্ক করেছেন, ভারতে এই মহামারী প্রতিরোধে যথেষ্ট সংখ্যক মানুষকে পরীক্ষা না করাটাই ভারতের বড় ভুল। তাঁদের মতে, মুহুর্তের মধ্যে  এদেশেও হঠাৎ করে হাজার হাজার মানুষের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে তাকে তাঁরা “কমিউনিটি ট্রান্সমিশন” বলে উল্লেখ করেছেন এবং তা জানাও যাবে না। 

তখন ওই সংক্রমিত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে পারে সংক্রমণ। এবিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার কথা উল্লেখ করে তারা জানিয়েছেন যে এই দেশটি করোনা সংক্রমণের সঙ্গে লড়াইয়ে সফল হয়েছে, তার অন্যতম কারণ হল সেদেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের শরীরে জরুরি ভিত্তিতে করোনার জন্য নির্দিষ্ট পরীক্ষা করা হয়েছে।
সেক্ষেত্রে করোনা রুখতে অবিলম্বে ভারতের যে পদক্ষেপগুলি নেওয়া উচিত তার একটা ধারণা দিয়েছেন তাঁরা। পদক্ষেপগুলি হল-

১) বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিকেও পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হোক । এখনও পর্যন্ত বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিকে ১৮৯৬ সালের আইন মেনে এই পরীক্ষার সুযোগ থেকে বিরত রেখেছে সরকার। প্লেগ সংক্রমণ রুখতে ওই আইন করা হয়েছিল।
২) বিদেশে ব্যবহৃত বহু ‘টেস্টিং কিট' এদেশে রদ করা হয়েছে। এগুলি এখনও পরীক্ষা করা হচ্ছে। অথচ এরমধ্যে বেশ কয়েকটি কিট ব্যবহার করে আমেরিকা ও ইউরোপে  করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
৩) সরকারি হাসপাতালে মানুষের লাইন দেওয়ার বিষয়টি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এইভাবেও দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে। করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে অসুস্থ ব্যক্তির বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করা যেতে পারে। তবে এর জন্য বিপুল সংখ্যক সংগ্রাহকের প্রয়োজন। সুতরাং এই বিষয়টি মাথায় রেখে বেসরকারি ক্ষেত্রকে এর অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
৪) করোনা পরীক্ষা অবশ্যই বিনামূল্যে হওয়া উচিত। এরজন্য সরকারকে অবিলম্বে বিরাট পরিমাণে তহবিল গঠন করতে হবে।
৫)  বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে সংক্রামিত ব্যক্তির ভর্তি হওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া উচিত সরকারের। প্রকৃতপক্ষে সরকারের উচিত, বেসরকারি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড গড়ে তোলার ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া এবং সেখানে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ভর্তি হওয়ার অনুমতি দেওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 + 2 =