সুখবর! বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে তৈরি কেন্দ্র! কারা পাবেন অগ্রাধিকার?

সুখবর! বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে তৈরি কেন্দ্র! কারা পাবেন অগ্রাধিকার?

নয়াদিল্লি: করোনার গ্রাসে চলে গিয়েছে ২০২০ গোটা বছর৷ ঘরবন্দি মানুষ অপেক্ষায় ছিলেন কবে এই রোগের ভ্যাকসিন তৈরি হবে। গত বছর শেষের দিক থেকেই অবশ্য ব্রিটেনে গণহারে টিকাকরণ শুরু করে দিয়েছে ফাইজার বায়োএনটেক। অন্যদিকে রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক ভি’র ট্রায়াল রাশিয়ার সঙ্গে ভারতেও শুরু হয়েছে। চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল শেষে কেন্দ্র জানিয়ে দিল, এবছরের শুরুতেই আইসিএমআরের প্রস্তাব মতো ৬৪ বছরের বেশি বয়সী সব মানুষদের সরকারি হাসপাতাল বা বিশেষ ক্যাম্প করে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হচ্ছে৷

আইসিএমআরের বিজ্ঞানী ডাঃ সমীরণ পান্ডা রবিবার জানান, সারা দেশে করোনা যেভাবে ছড়াচ্ছে, প্রবীণ নাগরিকদের ভ্যাকসিন দিলে তা ছড়ানোর সম্ভবনা অনেকটাই কমে যাবে। সেই মতোই সকল রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। সেইমতো রাজ্যগুলির কাছে দ্রুত পরিসংখ্যান রিপোর্ট চেয়েছে কেন্দ্র। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তৈরি ‘ পপুলেশন প্রোজেকশন ফর ইন্ডিয়া এন্ড স্টেস্টস ২০১১-২০৩৬” অনুযায়ী ২০২১ সালে ৬৪ বছরের বেশি নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি।

ভারতে এর আগে মোট আটটি সংস্থা ভ্যাকসিন তৈরির কাজ করছে। কিছু সংস্থা দেশীয় প্রযুক্তিতে আবার কিছু ভ্যাকসিন বৈদিশিক ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির সঙ্গে মিলে ভ্যাকসিন বানানোর কাজ চালাচ্ছে এবং ইতিমধ্যে ভারত বায়োটেক, সেরাম ইন্সটিটিউটের মতো সংস্থা ট্রায়ালের বেশ কিছু ধাপও পেরিয়েছে। কিন্তু জরুরি ভিত্তিতে শুক্রবারই অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রেজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে পূর্বে বলা হয়েছিল দেশের সমস্ত করোনা যোদ্ধারা এই ভ্যাকসিনে অগ্রাধিকার পাবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ হর্ষবর্ধন জানান দিল্লি তথা দেশের প্রত্যেক নাগরিককে বিনামূল্যে দেওয়া হবে কোভিড ভ্যাকসিন।

অপর দিকে এই ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। হরিয়াণার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিযে ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিলেও গতকাল তিনি করোনা আক্রান্ত হন। যদিও এই ঘটনায় অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। কেননা  পৃথিবী জুড়ে ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের কার্যকারিতা বিশ্লেষণের পর দেখা গিয়েছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার পরীক্ষায় সম্পূর্ণ ডোজ নেওয়ার পর ২০,২৬০ জনের মধ্যে ৩০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ফাইজার-বায়োএনটেক ৪৪ হাজারের স্বেচ্ছাসেবকের ট্রায়ালে করোনায় আক্রান্ত মাত্র ৮ জন। মর্ডানার ভ্যাকসিন ট্রায়ালে ৩০ হাজারের মধ্যে পাঁচ জন করোনায় আক্রান্ত। রাশিয়ার স্পুটনিকের ক্ষেত্রে ৪০ হাজারের মধ্যে মাত্র ৮ জন ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ নেওয়ার পরেও আক্রান্ত হয়েছেন। এই বিষয়ে ডাঃ সমীরণ পান্ডা ব্যাপক হারে মহামারির রূপ নেওয়া করোনা ভাইরাসের গ্রাস থেকে মানুষকে বাঁচানো এবং আক্রান্ত হলেও আক্রান্তের শারীরিক অবস্থা যাতে গুরুতর না হয় এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে মৃত্যু রোখাই কোভিড ভ্যাকসিনের মূল উদ্দেশ্য। অন্যদিকে ৯৫ শতাংশ কার্যাকর ভ্যাকসিন ফাইজার ভারতে তার ভ্যাকসিন বিক্রির অনুমোদন চেয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার কাছে। কিন্তু কোন ভ্যাকসিন ভারতে কার্যকর হবে, ১২১ কোটি মানুষ কীভাবে টীকাকরণে সামিল হবে, এবং আদেউ এই ভ্যাকসিন সকলে বিনামূল্যে পাবে কিনা এই নিয়ে মানুষের মধ্যে জল্পনা থেকেই যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 5 =