india
নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রথম কর্মসূচি ডাহা ফেল করল। এক কথায় বলা ভাল সুপারফ্লপ করল এই কর্মসূচি। রাজ্যসভা ও লোকসভা থেকে প্রায় দেড়শো বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার দেশজুড়ে যে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল বিরোধীরা, তা মূলত সীমাবদ্ধ থাকল দিল্লিতেই। বিহার ছাড়া কার্যত কোথাও সংঘবদ্ধ ভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি দেখা যায়নি। যে ঘটনায় নিঃসন্দেহে উদ্বেগ বাড়ল বিরোধী জোটের। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অন্যতম শরিক ডিএমকে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল সেই রাজ্যে ২২ ডিসেম্বর বিক্ষোভ করা যাবে না। কারণ ওই দিন তামিলনাড়ুর রাজ্য দিবস। এছাড়া তামিলনাড়ুর বেশ কিছু জেলায় বন্যা পরিস্থিতি রয়েছে। কিন্তু শুধু তামিলনাড়ু কেন, দু একটি রাজ্য ছাড়া কোথাও ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সংঘবদ্ধ বিক্ষোভ কর্মসূচি দেখা যায়নি।
ঘটনা হল লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে প্রায় দেড়শো বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তারই প্রতিবাদে শুক্রবার দেশ জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল ‘ইন্ডিয়া’ জোট। গত ১৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে বৈঠকে বসেছিলেন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতৃত্ব। সেখানেই ঠিক হয় ২২ ডিসেম্বর রাজ্যে রাজ্যে বিক্ষোভ দেখাবে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিকরা। কিন্তু জোটের সেই উদ্যোগ সুপারফ্লপ করল। তাই প্রশ্ন উঠে গেল, লোকসভা নির্বাচনে মসৃণ ভাবে আসন সমঝোতা করে ‘ইন্ডিয়া’ জোট কি আদৌ নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে লড়াইতে নামতে পারবে? অর্থাৎ বিজেপি বিরোধী সার্বিক জোট নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। কিন্তু ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রথম কর্মসূচি এভাবে মুখ থুবড়ে পড়ল কেন? রাজনৈতিক মহল মনে করছে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট শরিকদের দূরত্ব এর প্রধান কারণ। সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের নেতৃত্বহীনতা নিয়েও ফের চর্চা শুরু হয়েছে। তাই বেশিরভাগ রাজ্যে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় কংগ্রেস থাকলেও ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বিক্ষোভ কর্মসূচি জোর ধাক্কা খেয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে দিল্লিতে কিছুটা হলেও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতৃত্ব। কংগ্রেসের তরফে সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধী, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা, সিপিআই এমএল (লিবারেশন) নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম বেনজির নুর প্রমুখ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন। কিন্তু প্রতিবাদ সভা একেবারেই জমেনি। রাহুল গান্ধীর ম্যাড়মেড়ে বক্তব্য সবাইকে হতাশ করেছে।
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্যে রাজ্যে আসন রফা চূড়ান্ত করে ফেলার ডাক দিয়েছে কংগ্রেস বাদে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অন্যান্য শরিক দল। কিন্তু কোথায় কি? শরিক দলগুলির সঙ্গে একে অপরের সম্পর্ক কোন জায়গায় রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। এই পরিস্থিতিতে কোন পথে হাঁটলে যথাযথভাবে বিজেপির বিরোধিতা করা যাবে, তা ভাবতে হবে জোট শরিকদের। সকলেই ভেবেছিলেন বিরোধী জোটের প্রথম কর্মসূচি রীতিমতো সাড়া ফেলে দেবে। কিন্তু এই কর্মসূচির সামান্যতম অভিঘাত একটি রাজ্যেও পড়েনি। তাই লোকসভা নির্বাচনে প্রবল শক্তিশালী বিজেপি তথা এনডিএ-র বিরুদ্ধে ‘ইন্ডিয়া’ জোট আদৌ মাথাব্যথার কারণ হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।