কলকাতা: প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম মেনেই সঠিক সময় জন্ম হয় সন্তানের৷ কিন্তু, এখন শিক্ষিত বাবা-মায়েরা নিজেরাই ঠিক করছেন সন্তান আগমনের দিন৷ সে ক্ষেত্রে তাঁদের পছন্দ দেবীপক্ষ৷ ঢাকে কাঠি পড়তেই শুরু হয়ে গিয়েছে সন্তান ভূমিষ্ঠ করাবার ধুম। সেলিব্রিটি থেকে ব্যবসায়ী, উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিরা এখন তিথি-নক্ষত্র দেখে নিজের সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখাতে চাইছেন৷ নামী প্রসূতি বিশারদদের কাছে আবদার, অনুরোধ নিয়ে হামেশাই হাজির হচ্ছেন হবু বাবা মায়েরা। এই প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে এসএসকেএম-এর মতো প্রথম সারির সরকারি হাসপাতালেও। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত যা ট্রেন্ড, তাতে দেখা গিয়েছে মহালয়ার পর, প্রতিপদ থেকে পঞ্চমী—এই তিনদিনে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি লেবার ওটি হয়েছে। বলাই বাহুল্য, অধিকাংশই ছিল প্ল্যানড সিজারিয়ান সিকশন বা সি সেকশন ডেলিভারি।
এসএসকেএম-এর স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান ডাঃ সুভাষ বিশ্বাস বলেন, ‘যতই বোঝানোর চেষ্টা করি যে, তিথি দেখে কোনও লাভ নেই, কিন্তু কেউই কথা শোনেন না। তাঁদের বোঝাই যে, মেয়ে দুর্গাও হতে পারে, মাতাহারিও হতে পারে। ছেলে বিবেকানন্দও হতে পারে, দাউদও হতে পারে। তিথি মেনে জন্মের সঙ্গে গুণী ও বিখ্যাত হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, স্বাভাবিক নিয়মে ভূমিষ্ঠ হওয়া সন্তানদের মধ্যেই জ্ঞানীগুণী হওয়ার পরিসংখ্যান বেশি।’ তবে সে কথায় চিড়ে ভেজেনি৷ তাইতে অন্য সময়ে পিজিতে যেখানে প্রতিদিন ১৬-২০টি সন্তান প্রসব হয়। সেখানে প্রতিপদে ২৩টি, চতুর্থীতে ২২টি এবং পঞ্চমীতে ২৬টি লেবার ওটি হয়েছে! প্রাইভেটে বেশিরভাগই সিজার। সরকারি ক্ষেত্রে সিজারের সংখ্যা বাড়লেও তা সাধারণ প্রসবের চেয়ে বেশি হত না৷ কিন্তু, ৮-১৯ অক্টোবরের হিসেব বলছে, সেখানে তিনভাগের দু’ভাগই হয়েছে সিজার।