ভবানীপুরে ‘অন্যায়’ খুঁজে কালীঘাটে নাড্ডা! বিজেপির পাখির চোখ নেত্রীর দুর্গ?

ভবানীপুরে ‘অন্যায়’ খুঁজে কালীঘাটে নাড্ডা! বিজেপির পাখির চোখ নেত্রীর দুর্গ?

 কলকাতা: বিহার নির্বাচনের পর বাংলাকেই পাখির চোখ করেছে বিজেপি। পূর্ব ভারতের গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি রাজ্যে পদ্মফুল ফোটাতে মরিয়া গেরুয়া শিবির৷ এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা দখলের লক্ষ্যে আলাদা করে টিম তৈরি করেছে পদ্ম ব্রিগেড। গোটা রাজ্যকে আলাদা আলাদা জোনে ভাগ করে সেখানে নেতাদের দায়িত্ব দিয়ে বাংলায় আনা হয়েছে৷ নজরকাড়া কেন্দ্রগুলিকেও আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পৃথক পৃতক নেতাদের৷ তারইমধ্যে রয়েছে  মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র ভবানীপুর বিধানসভা৷ বুধবার সেই ভবানীপুর থেকেই বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা৷ ভোটের প্রচারের পর সরাসরি পৌঁছে যান কালীঘাট৷ দেন পুজো৷

আজ দুপুরে কলকাতা পৌঁছে প্রথমে হেস্টিংসে দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করার কর্মিসভার উদ্বোধন করেন তিনি। পরে যওগ দেন চা চক্রে৷ এছাড়াও সেখানেই জনসম্পর্ক অভিযান কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ারও কথা রয়েছে তাঁর। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান জেপি নাড্ডা। তিনি বলেন, ‘‘মমতার আরেক নাম অসহিষ্ণুতা। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের আমলে অসহিষ্ণুতা বেড়েই চলেছে।’’ এর পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দলের পরিবারতন্ত্র কায়েম করার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের কাছে দলটাই পরিবার। অন্যদিকে, বিজেপির দলই পরিবার। সেই জন্য নেতার বাড়ি থেকে নয়, কার্যলয় থেকে দল পরিচলনা করে বিজেপি।’’

বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘‘মহিলাদের ওপর গার্হস্থ্য হিংসা, মানব পাচার এবং ধর্ষণ সবচেয়ে বেশি। ক্রাইম ব্যুরোকে পরিসংখ্যান জানাচ্ছেন না মমতাদি। এমনকী, কোভিডের পরিসংখ্যানও কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাচ্ছেন না।’’ আয়ুষ্মান ভারত থেকে শুরু কিষাণ নিধির মতো বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেনি রাজ্য সরকার। সে প্রসঙ্গ তুলে ধরে এদিন জেপি নাড্ডা দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলি কার্যকর না করে জনগণের ক্ষতিই করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাড্ডা বলেন, ‘‘২০০৯ লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপি ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০১৯ সালে সেই হার হয়েছে ৪০ শতাংশ।’’ এবারের বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপি ২০০-র বেশি আসন পেয়েছে ক্ষমতা দখল করবে বলে এদিন দাবি করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি৷

ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রটি রাজ্যের অন্যতম কেন্দ্র। এই কেন্দ্র থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তার আগে এখানে দাঁড়াতেন দলের অন্যতম নেতা সুব্রত বক্সি। ২০১১ বিধানসভা নির্বাচন থেকে ভবানীপুর থেকেই প্রার্থী হন তৃণমূল সুপ্রিমো৷ ২০১১ বিধানসভা উপনির্বাচনে এখানে প্রার্থী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেবার তিনি পেয়েছিলেন ৭৭.৪৬ শতাংশ, ৭৩,৬৩৫ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন তিনি। ২০১৬ নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৪৭.৬৭ শতাংশ বা মোট ৬৫,৫২০ ভোট পান। ২০১৬ নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন ২৬, ২৯৯ ভোট বা মোট ভোটের ১৯.১৩ শতাংশ ভোট৷ অন্যদিকে, ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যে মাত্র দুটি আসনে জয়লাভ করে৷ সেখানে ২০১৯ এ ১৮টি আসনে পদ্মফুল ফোটে৷ ফলে রাজ্যে যেমন বিজেপির ভোট বাড়ছে, তেমনই মুখ্যমন্ত্রীর গড়েও নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি। আর সেই কারণেই, ২০১১ নির্বাচনে যাদবপুরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হারের দশ বছর পর আবার বিধানসবা নির্বাচনে ২০২১ এ ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়ে বাংলা দখল করতে মরিয়া গেরুয়া শিবির৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × five =