ইসলামাবাদ: তোষাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শনিবার তাঁকে তিন বছরের সাজা শোনায় ইসলামাবাদের একটি আদালত। শাস্তি ঘোষণার হতেই গ্রেফতার করা হল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর চেয়ারম্যানকে। পাক আইন অনুযায়ী, আদালতের এই রায়ের ফলে আগামী পাঁচ বছর ভোটে লড়তে পারবেন না তিনি। পাশাপাশি এক লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীকে৷
এই সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন ইমরান খান। তোষাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রায়াল কোর্টের বিচারপতি। আদালতের নির্দেশ আসার পরই লাহোরের জামান পার্কের বাড়ি থেকে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে, চলতি বছরেই পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা। বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছিল, মুসলিম নওয়াজ-পাকিস্তান পিপলস পার্টির জোট সরকারের আমলে যে ভাবে পাকিস্তানের আর্থিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে,তাতে মানুষ আবার ইমরানের দলের প্রতি আস্থা রাখতে শুরু করেছে। কিন্তু ভোটের আগে এই রায় নির্বাচনী ময়দানে প্রাক্তন পাক ক্রিকেট অধিনায়কের ‘প্রত্যাবর্তন’কে অনিশ্চিত করে তুলল৷ আপাতত তাঁকে লাহোরের কোট লতপত জেলে পাঠানো হয়েছে বলে পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে৷
ইমরান খানের বাড়ির বাইরে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং জামান পার্ক সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইমরান গদিচ্যুত হওয়ার পরই তোষাখানা মামলার সূত্রপাত৷ দুবাইয়ের এক ব্যবসায়ী দাবি করেন, বিদেশ থেকে ইমরানের উপহার পাওয়া ঘড়ি তিনি ২০ লক্ষ ডলারে কিনে নিয়েছিলেন। ওই ব্যবসায়ী আরও জানান, ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার সময় সৌদি আরবের রাজা মহম্মদ বিন সলমন তাঁকে ওই বহুমূল্য ঘড়ি উপহার দিয়েছিলেন।
ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন জানা, ইমরান পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না৷ কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গত অক্টোবর মাসে ইসলামাবাদ হাই কোর্টে আবেদন জানান তিনি৷ আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে নিম্ন আদালতেই মামলা ফেরত পাঠায়। গত মে মাসে ইসলামাবাদ পুলিশ লাইন্সের বিশেষ আদালত ইমরানকে দোষী সাব্যস্ত করে।