দেরাদুন: ক্ষমা চেয়ে অ্যালোপ্যাথি নিয়ে তাঁর করা আপত্তিকর মন্তব্য প্রত্যাহারের পরও রামদেব বনাম ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোশিয়েশন তরজা যেন কিছুতেই শেষ হচ্ছে না। এবার যোগগুরুর বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদোহিতার আইনে’ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখল আইএমএ৷ এমনকি ভ্যাকসিন নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য রামদেবের প্রচার বন্ধ করার আর্জিও জানিয়েছে আইএমএ৷ এর আগে এদিনই ১ হাজার কোটি টাকার মানহানির নোটিস পাঠাল আইএমএর উত্তরাখণ্ড শাখা। এই নোটিসে বলা হয়েছে, অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে যোগগুরু মন্তব্যের জন্য তাঁকে ১৫ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। এবং তাঁর যে ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, তার পালটা আরও একটি ভিডিও প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি, যোগগুরু রামদেবের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, যাতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা আসলে বোকামি। চিকিৎসার নামে তামাশা চলে। লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে জন্যই অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খেয়ে।’ এতেই মারাত্মক চোটে যান দেশের চিকিৎকরা৷ রামদেবকে আইনি নোটিসও পাঠায় আইএমএম৷ যদিও পরে বিতর্কের জেরে এই মন্তব্য নিয়ে সাফাই দিয়ে তাঁর সংস্থা পতঞ্জলি দাবি করে, এটা একটা গোপন বৈঠক ছিল। আর স্বামীজি হোয়াটসঅ্যাপে আসা একটি মেসেজ সকলকে পড়ে শোনাচ্ছিলেন শুধু। তাঁর এই ভিডিও বার্তা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। তাতেও বরফ গলেনি৷ আইএমএর তরফেই রামদেবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখা হয়। চাপে পড়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন দু’পাতার চিঠি লিখে রামদেবকে ক্ষমা চাইতে বলেন৷
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর চিঠি পেয়ে চাপের মুখে বাবা রামদেব প্রকাশ্যে ক্ষমা চান ঠিকই, কিন্তু ফের অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে ২৫টা প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে দেন। তাঁর প্রশ্ন, অ্যালোপ্যাথি যদি এতই ভালো হবে, তাহলে চিকিৎসকরা অসুস্থ হন কেন। অ্যালোপ্যাথি ২০০ বছরেও বহু রোগের ওষুধ তৈরি করতে পারেনি কেন? অ্যালপ্যাথি থাইরয়েড, আর্থারাইটিস, অ্যাজমার মতো রোগ আজও সারাতে পারেনি কেন? চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে যোগগুরুর এহেন কাজের জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে ২৬ মে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদোহিতা আইনে’ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানায় আইএমএ৷ মানহানির মামলা করে আইএমএর উত্তরাখণ্ড শাখা। তাঁরা জানিয়েছে, এই চিঠি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তাঁর বক্তব্যের জন্য লিখিতভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। নয়তো এক হাজার কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে৷