কলকাতা: অবশেষে ‘মানভঞ্জন’ শতাব্দী রায়ের৷ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর দিল্লি না যাওয়ার ঘোষণা করলেন অভিনেত্রী সাংসদ শতাব্দী রায়৷ বলেল, সব মিটে গিয়েছে৷ দলেই আছেন৷
ফেসবুকে শতাব্দী রায়ের বেসুরো মন্তব্য ঘিরে চমর অস্বস্তিতে পড়েছিল শাসকদল তৃণমূল৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে খুব একটা দেরি করেনি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব৷ তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের মান ভাঙাতে ময়দানে নেমে পড়েন কুণাল ঘোষ থেকে শুরু করে সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েনরা৷ তিন বারের সাংসদের ‘মানভঞ্জনে’ নামেন খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শুক্রবার সন্ধ্যায় শতাব্দীকে নিয়ে অভিষেকের দফতরে হাজির হন কুণাল ঘোষ৷ ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে শুরু হয় রুদ্ধদ্বার বৈঠক৷ দীর্ঘ বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন শতাব্দী৷
দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শতাব্দী রায় সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘আমার যে কথাগুলি বলার ছিল, আমার যে অভিমান, অভিযোগ ছিল, সেই কথাগুলি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছি৷ তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে৷ আমার যে অভিযোগ ছিল, যে সমস্যা হচ্ছে, সেটি আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছি৷ তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেছি৷ সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে বলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে আশ্বস্ত করেছেন৷ আমি বিশ্বাস করছি, সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে৷’’
আপনি কি তাহলে দিল্লি যাচ্ছেন না? সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে মন্তব্য করেন শতাব্দী রায়৷ বলেন, ‘‘না আমি দিল্লি যাচ্ছি না৷’’ বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই জবাব দেন কুণাল ঘোষ৷ বলেন, তিনি সংসদ, দলের নেত্রী৷ দলেই আছেন, থাকবেন৷ এরপর শতাব্দী রায়ের তাৎপর্যপূর্ণ জবাব, ‘‘আমি দলেই আছি৷ আমার মনে হয়, এই কয়েকটা মাস, দলের পাশে থাকা দরকার৷’’ কয়েকটা মাস বলতে ঠিক কী বোঝাতে চাইলেন সাংসদ? তাহলে কি বিধানসভা ভোটের জলমেপে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি? শেষ হয়েও হল না জল্পনার অবসান! মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷
শতাব্দী রায়ের ফ্যান ক্লাবের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় বাংলার রাজনীতির ময়দানে৷ তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ নিজেই জানান, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন৷ সেখানে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা হতে পারে বলেও জল্পনা বাড়িয়ে দেন সাংসদ নিজে৷ তৈরি হয় বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে শতাব্দী রায়ের বাড়িতে যান তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ৷ দীর্ঘ বৈঠকের পর কুণাল জানান, পুরনো বন্ধুর সঙ্গে কিছুক্ষণ গল্প করেছেন৷ সন্ধ্যায় বদলে যায় পরিস্থিতি৷ দিনভর বিদ্রোহী মনোভাবের পর সন্ধ্যায় সুর নরম করেন শতাব্দী রায়৷ সাফ জানিয়ে দেন, সম মিটে গিয়েছে৷