করোনা রুখতে #ব্রেক দ্যা চেনে’র সাফল্য শোনালেন IAS অফিসার

করোনা রুখতে #ব্রেক দ্যা চেনে’র সাফল্য শোনালেন IAS অফিসার

তিরুঅনন্তপুরম:  করোনা আতঙ্ক গ্রাস করেছে বিশ্ব মানবজাতিকে৷ এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচ্য বিষয় কোভিড করোনা সংক্রমণ৷ করোনা মোকাবিলায় সোমবার বিকেল থেকে দেশের ৭৫টি জেলায় শুরু হচ্ছে লকডাইন৷ এখনও পর্যন্ত ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯১৷ মৃত বেড়ে ৯৷ এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীকে সচেতন করার পাশাপাশি তাঁদের সুরক্ষায় একাধিক পদেক্ষপ করল কেরল সরকার৷

করোনার মতো মহামারি মোকাবিলায় ২০ হাজার কোটি টাকার স্পেশ্যাল প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন৷ এই প্যাকেজের আওতায় রয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ঋণদান, পেনসন, বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দান, ভর্তুকি যুক্ত খাবার, এমএনআরইজিএস-এর অধীনে সহায়তা দান, কর ছাড় ও বকেয়া পরিশোধের মতো বিষয়গুলি৷ পাশাপাশি মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস প্রসঙ্গে সচেতনতা বাড়াতে ‘#ব্রেক দ্য চেন’ অভিযান শুরু করেছে কেরল সরকার৷ এই মহামারির কবল থেকে বাঁচতে হাত ধোয়া এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা কতটা জরুরি, তা বোঝাতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বাস স্টপ, হাসপাতাল এবং সরকারি দফতরগুলিতে বসানো হয়েছে একাধিক হ্যান্ডওয়াশিং আউটলেট৷

গত ১৬ মার্চ ‘#ব্রেক দ্য চেন’ অভিযান শুরু করেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেকে শৈলজা৷ তিনি বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে স্বাস্থ্যসচেতনাই এখন  সবচেয়ে বড়হাতিয়ার৷ বাইরে বেরলেই বারবার সাবন দিয়ে হাত, মুখ ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে আমাদের৷ এই অভ্যাসই শৃঙ্খলাভঙ্গ করবে ভাইরাসের৷’’ এমআইটি-র সমীক্ষা বলছে, সামান্য একটা অভ্যাসই সারা বিশ্বে বিপুল পরিবর্তন নিয়ে আসবে৷ এই অভিযানে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন মহত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিম (এমএনআরইজিএস)-এর প্রধান আইএএস অফিসার ড. দিব্যা এস আইরায়৷ এই মহামারি সম্পর্কে গ্রামীন এলাকায় ক্রমাগত সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে চলেছেন তিনি৷ মানুষকে বোঝাচ্ছেন করোনা থেকে মুক্তির উপায়৷ আইয়ার জানান, কেরলে রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি প্রকল্পের অধীনে থাকা ১৬. ৩ লক্ষ মানুষের মধ্যে বহু মানুষই ৫০ পেরিয়েছেন৷ যাঁদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও খুব বেশি৷ এই সকল মানুষকে সচেতন করা না গেলে, বিপদ বাড়বে৷

তিনি বলেন, ‘‘একজন শিক্ষিত নাগরিক হিসাবে সমাজের প্রতি আমাদের একটা দায়বদ্ধতা আছে৷ কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা হামেশাই পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর কথা ভুলে যাই৷ তাঁরা অত্যন্ত নিরুপায়৷ তাঁদের কাছে অধিকাংশ সময়ই সঠিকভাবে তথ্য পৌঁছয় না৷ চারপাশে কী ঘটে চলেছে সে বিষয়ে তাঁরা অবগত নন৷’’ এই অভিযানের অঙ্গ হিসাবে কিছু দিন আগে কাল্লিক্কাদ গ্রামে গিয়েছিলেন আইয়ার৷ তিনি বলেন, ‘‘কাল্লিক্কাদে গিয়ে মানুষকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমরা অবগত করেছি৷ কীভাবে হাত ধুতে হবে তা শেখানো হয়েছে৷ বারবার সাবন দিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাঁদের৷ সুস্থ থাকতে কাজের আগে এবং পরে সাবান দিয়ে স্নান করার কথাও তাঁদের বোঝানো হয়েছে৷’’

তিনি বলেন, মানুষের কাছে সঠিক তথ্য থাকাটা খুবই জরুরি৷  সঠিক তথ্য না পেলে এই সমস্যার মোকাবিলা সম্ভব নয়৷ এই অভিযান শুধু সচেতনাতা বাড়ানোর জন্যই নয়, মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ো তোলার জন্যও বটে৷ আইরায় আরও বলেন, ‘‘প্রধানত দুটি বিষয়কে মাথায় রেখে শুরু হয়েছে #ব্রেক দ্য চেন অভিযান৷ প্রথমত নিজেকে সুরক্ষিত করা এবং দ্বিতীয়ত অপরকে সুরক্ষিত রাখা৷ একটি সম্প্রদায় হিসাবে আমরা একযোগে কাজ করতে পারলে, তবেই সাফল্য আসবে৷ একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে  মানুষকে সচেতন করা আমাদের কর্তব্য৷ সমাজের প্রতি আমরা দায়বদ্ধ৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three − 2 =