বিষ্ণুপুর: বহিরাগত গুন্ডা নিয়ে বিজেপিকে ফের তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিষ্ণুপুরের জনসভা থেকে দিল্লির কৃষক আন্দোলন নিয়েও নরেন্দ্র মোদিকে খোঁচা দিতে ভোলেননি তিনি। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মিথ্যেবাদী বলেও তোপ দাগলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বললেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতো এত বড় মিথ্যাবাদী আমি আগে দেখিনি। শুধু মিথ্যে কথা বলে।”
আগামী ২৭ মার্চ পুরনো সহযোদ্ধা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটগ্রহণের আর ৩ দিনও বাকি নেই। আহত পা নিয়েই চুটিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মঙ্গলবার বিষ্ণুপুরে বিশাল জনসভা করলেন তিনি। মঞ্চ থেকে ফের একবার ভারতীয় জনতা পার্টিকে নিশানা করলেন। বললেন, “প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারটাকে আগে সম্মান করতাম। এখনও যে করি না তা নয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির মতো এত বড় মিথ্যাবাদী আমি আগে দেখিনি। শুধু মিথ্যে কথা বলে।” বিষ্ণুপুরের মানুষের উদ্দেশ্যে বিজেপির অত্যাচার সম্পর্কে তিনি বলেন, “বিজেপির অত্যাচারে উত্তরপ্রদেশের পুলিশরা আজকে চাকরি ছেড়ে দিচ্ছে। কত তফশিলি মেয়েদের পুড়িয়ে দিচ্ছে, তাদের বাবা-মাকে অত্যাচার করতে যাচ্ছে। আর বিষ্ণুপুরে পাঁচতলার হোটেল থেকে খাবার নিয়ে এসে বলছে আমি তফশিলি বন্ধু!” বিজেপির বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলে মমতার হুঁশিয়ারি, “তফশিলিদের খুন করো তোমরা। তফশিলিদের অত্যাচার করো তোমরা, আদিবাসীদের অত্যাচার করো তোমরা, সংখ্যালঘুদের অত্যাচার করো তোমরা।”
দিল্লির সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে চলা কৃষক আন্দোলন নিয়েও নরেন্দ্র মোদির কেন্দ্রীয় সরকারকে এদিন বিঁধেছেন মমতা। বলেছেন, “আজকে কৃষকরা রাস্তায় পড়ে আছে এক বছর ধরে। পেরেক পুঁতে দিয়েছে, যাতে রাস্তায় হাঁটতে না পারে ওরা। কেন? কারণ নরেন্দ্র মোদির তিনটেই সিন্ডিকেট। একটা অমিত শাহ, একটা নরেন্দ্র মোদি, আর একটা আদানি। বাংলায় আসলে সব চাষের জমি লুট করে নিয়ে যাবে আদানি। সব ফসলকে নেবে। ভোগ করবে শুধু অমিত শাহ নরেন্দ্র মোদি আদানি। আর বাকি দেশের সব মানুষ কেঁদে কেঁদে মরবে।”
বাংলায় বহিরাগত গুন্ডার প্রবেশ নিয়েও বিজেপিকে তুলোধোনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। চাঁচাছোলা ভাষায় বলেছেন, “বহিরাগত গুন্ডাদের নিয়ে আসছে বাংলায়। বহিরাগত গুন্ডা কারা? বাংলায় যারা থাকে, তাদের আমরা বহিরাগত বলি না। তা সে গুজরাটি, সিন্ধ্রি, পাঞ্জাবি, তামিল যাই হোক না কেন। কিন্তু বিজেপি উত্তরপ্রদেশ থেকে গুন্ডাদের সাজিয়ে-গুছিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছে বাংলায়। কপালে তিলক কেটে, গেরুয়াবেশ পড়ে, পান বাহার চিবোতে চিবোতে বাংলার সংস্কৃতিকে একেবারে ধ্বংস করে দিচ্ছে।” তৃণমূল সুপ্রিমো হুংকার দিয়ে বলেন, “এটা বাংলার নির্বাচন, লোকসভা নির্বাচন নয়। এখানে আমাকে চাইলে জোড়াফুলে ভোট দিতে হবে, অন্য কোনও ফুলে নয়।”