কলকাতা: দু’দিন আগে তাঁর দিল্লি থেকে কলকাতায় ফেরা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা শুরু হয় রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে। বিজেপির শীর্ষ এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে ‘বিচ্ছেদী’ সুর বাজছে এমন খবর করেছিল সংবাদমাধ্যমের একাংশ। পরের বছর বিধানসভা নির্বাচন, এমত পরিস্থিতিতে তৃণমূল এবং মুকুল রায়ের পুনর্মিলন দেখা যেতে পারে এই জল্পনায় সরগরম হয়েছিল বাংলার রাজনীতি। সে সম্ভাবনায় কার্যত জল ঢেলে দিলেন খোদ মুকুলই। সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জানিয়ে দিলেন, তিনি বিজেপিতে ছিলেন, বিজেপিতে আছেন এবং বিজেপিতেই থাকবেন।
মুকুল এও পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলের একাংশ তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যমকে ঘুষ দিয়েছে। তাই এই ‘অপপ্রচার’। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে তিনি বলেছেন, ‘আমি এই ঘটনায় তদন্ত চাই। আমার কাছে খবর আছে সংবাদমাধ্যমের একাংশকে বড়সড় ঘুষ দেওয়া হয়েছে এই মিথ্যা খবর রটানোর জন্য। আমি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘তৃণমূল এবং অন্যান্য বাইরের কিছু লোক এওসব কথা রটিয়ে বিজেপি নেতা এবং কর্মীদের কাছে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে। এসব করে তারা আমার রাজনৈতিক কেরিয়ারের ক্ষতি করতে চাইছে।’
আরও পড়ুন: বাংলার সাপ্তাহিক লকডাউনে প্রভাব রেল পরিষেবায়, বাতিল গুচ্ছ ট্রেন
দিল্লিতে বিজেপির বৈঠক ছেড়ে কলকাতায় আসা প্রসঙ্গে তিনি শারীরিক অসুস্থতার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমার ইনজেকশন নিতে হয় আর সেই দিন মিস করা যাবে না। তাছাড়া দলের শির্ষ নেতাদের কাছে সম্মতি নিয়েই কলকাতা ফিরেছি আমি।’
বিজেপিতে তাঁর স্থান নড়বড়ে এই বিতর্ক নিয়ে মুকুলের সাফ জবাব, ‘আমি বিজেপির ন্যাশনাল এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য। নির্বাচন কমিটির দায়িত্বেও আমিই ছিলাম। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে দলে আমার দায়িত্ব কী তা পরিষ্কার এবং কোনও অনিশ্চয়তায় ভুগছি না আমি।’
আরও পড়ুন: ফের রণংদেহি রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রীকে আলোচনার পাঠ রাজ্যপালের
সম্পূর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে মমতার বিরুদ্ধে কোনও কথা বলতে শোনা গেল না প্রাক্তন তৃণমূল নেতাকে। বর্তমানে রাজ্যে লকডাউন নিয়ে যে কড়াকড়ি হয়েছে সেরকম আগে হলে এত মৃত্যু ও সংক্রমণ হত না, রাজ্য সরকারের সমালোচনা বলতেও এটুকুই শোনা গেল মুকুলের মুখে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ যেমন প্রায় নিয়ম করে প্রতিদিন মমতা এবং তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন, তার ছিটেফোঁটাও ছিল মুকুলের গলায়।