ওয়াশিংটন: করোনা আতঙ্কে নাভিশ্বাস উঠেছে গোটা বিশ্বে৷ নতুন এই ভাইরাসকে কী ভাবে কাবু করা যায় তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে আমেরিকা৷ সোমবার থেকে সেদেশে শুরু হল করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল৷ ভ্যাকসিনটি নাম দেওয়া হয়েছে mRNA-1273৷
ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের জন্য অর্থের যোগান দিচ্ছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের অন্তর্গত ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজ (এনআইএআইডি)৷ কাজ চলছে সিয়াটেলের কাইসের পার্মানেন্ট ওয়াশিংটন হেলথ রিসার্চ ইনস্টিটিউটে। তবে জনস্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনটি সম্পূর্ণরূপে তৈরি হতে এক থেকে দেড় বছর সময় লেগে যাবে৷
এদিন সিয়াটেলের চার জনের শরীরে প্রথমবার এই প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হয়৷ প্রথম ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করা হয় ৪৩ বছরের এক মহিলার শরীরে৷ স্বেচ্ছাসেবী ওই মহিলা দুই সন্তানের মা বলে জানা গিয়েছে৷
১৮ থেকে ৫৫ বছরের ৪৫ জন স্বাস্থ্যবান মানুষের উপর পরীক্ষামূলকভাবে ভ্যাকসিনের বিভিন্ন মাত্রা প্রয়োগ করা হবে৷ প্রায় ৬ সপ্তাহ ধরে চলবে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল৷ সোমবার প্রথম এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ করা হল৷ ভ্যাকসিন সম্পূর্ণভাবেই নিরাপদ৷ এর থেকে সংক্রমিত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই৷ কারণ এই ভ্যাকসিনে করোনা ভাইরাস নেই৷ বরং এটি সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে বলেই জানানো হয়েছে৷ তবে ভ্যাকসিনের কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা, সেটাই প্রধান লক্ষ্যনীয় বিষয়৷ কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ধরা না পড়লে পরবর্তী ধাপে পা বাড়াবেন বিজ্ঞানীরা৷ নতুন প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা এই টিকা প্রচলিত টিকার থেকে অনেক বেশি কার্যকর হবে তাঁরা আশাবাদী৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে করোনার ভ্যাকসিন তৈরির কাজ৷ বেশ কিছু জায়গায় অস্থায়ী ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে আরও দু’মাস সময় পাওয়া যায়৷
এনআইএআইডি-র ডিরেক্টর অ্যান্টনি এস, ফোসি বলেন, ‘‘করোনা প্রতিরোধে একটি নিরাপদ ও কার্যকরী ভ্যাকসিন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়৷ প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা দ্রুত গতিতে শুরু করা হয়েছে৷ পরবর্তী লক্ষ্যে পৌঁছতে প্রথম পর্যায়ের সাফল্য পাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷’’
এদিকে, করোনায় ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪৷ মৃত্যু হয়েছে তিন জনের৷ প্রাথমিক ভাবে কেরলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি থাকলেও, এ বার তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে মহারাষ্ট্র। মহারাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬৷ সারা পৃথিবীতে এই মুহূর্তে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষ। ইতিমধ্যেই প্রায় সাড়ে ছ’হাজার মানুষের মৃত্যুও হয়েছে ওই রোগে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত চিনে৷ চিনের পর করোনার সবচেয়ে বেশি প্রকোপ পড়েছে ইটালিতে৷ সংক্রমণ ছড়িয়েছে স্পেন, আমেরিকা ও ইরানের মতো দেশগুলিতেও৷