নয়াদিল্লি: এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গোটা পৃথিবীর বুকে তান্ডব চালিয়েছে করোনা ভাইরাস। এই অতিমারীর প্রকোপে বিশ্ব জুড়ে শুধু যে অসংখ্য মানুষের প্রাণ গিয়েছে তাই নয়, মানুষের রোজকার জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকেই এলোমেলো করে দিয়েছে কোভিড ১৯। তবে বহু প্রতীক্ষার পর অবশেষে আবিষ্কৃত হয়েছে করোনার প্রতিষেধক ভ্যাকসিন। দীর্ঘ অন্ধকারের পর অবশেষে আশার আলো দেখেছে সাধারণ মানুষ।
তবে শুধুমাত্র ভ্যাকসিন নিলেই যে করোনা ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই মিলবে, তা কিন্তু নয়। হতাশা, উদ্বেগ একাকীত্ব তথা মানসিক অবসাদ করোনা টিকাকেও ব্যর্থ করে দিতে পারে, এমনটাই জানালেন একদল মার্কিন গবেষক। অতিমারী আবহে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের মধ্যে একাকীত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলার ‘নিউ নর্মালে’ তাই কাছের মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া আর আগের মতো সহজ নেই। ফলে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছেন অনেকেই। আর এই পরিস্থিতিই করোনার জন্য ভয়ানক বলে দাবি করেছেন মার্কিন গবেষক দল।
এদিন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াহো স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক করোনা ভাইরাস এবং তার প্রতিষেধক ভ্যাকসিন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, হতাশা, একাকীত্ব এবং মানসিক উদ্বেগ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। আর তার ফলে যে কোনো ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা হ্রাস পায়। এদিন মনোবিজ্ঞানের একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত লেখায় ওই মার্কিন গবেষক দলের প্রধান অ্যানেলিস ম্যাডিসন জানিয়েছেন, করোনার ভ্যাকসিন নেওয়ার ২৪ ঘন্টা আগে পরিমিত ব্যায়াম এবং ভালো ঘুম আবশ্যক। এটি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাকে প্রাথমিক ভাবে অনেক বাড়িয়ে দেয়।
বস্তুত, করোনার হানা সর্বাধিক ক্ষতি করেছে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে করোনা মোকাবিলায় সেদেশের টিকা গুলি যথেষ্ট কার্যকর। কিন্তু দুশ্চিন্তা, মানসিক অবসাদের কারণে মার্কিন জনগণ টিকার উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। উল্লেখ্য, করোনা আবহে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে বিশেষ ভাবে নজর দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা বারবার শারীরের পাশাপাশি এই কঠিন সময়ে মনকেও শক্ত রাখতে বলেছেন। সম্প্রতি চিকিৎসক মহলে এ নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।