কলকাতা: আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ২০২০ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এবার প্রশ্নফাঁস রুখতে একাধিক পদক্ষেপ নিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস জানান প্রশ্নপত্রের প্যাকেটে বারকোড থাকবে। পাশপাশি, কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার পিছনে স্কুলের গাফিলতি প্রমাণিত হলে অনুমোদন বাতিল করা হবে বলেও জানান তিনি। প্রত্যেকটি পরীক্ষার ঘরে একজন করে শিক্ষক নজরদারির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মেটাল ডিটেক্টর স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত সংসদের। রাজ্যের প্রায় ৩০০ টি পরীক্ষাকেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস।
মেটাল ডিটেক্টরের পাশাপাশি ইন্টারনেট বন্ধ করার জন্য রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরকে আবেদন জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংসদ সভাপতি।বিশেষত মালদহ ,মুর্শিদাবাদ উত্তরদিনাজপুর, বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা গুলিতেই স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্র গুলির জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সংসদের তরফে। সংসদের তরফে পরীক্ষা কেন্দ্র গুলি কেউ করা সর্তকতা জারি করা হয়েছে।সংসদ সভাপতি জানিয়েছেন “কোন পরীক্ষা কেন্দ্র যদি টোকাটুকি মতো ঘটনা আটকাতে ব্যর্থ হন বা সদর্থক ভূমিকা না নেন তাহলে সেই স্কুলের অনুমোদন পর্যন্ত বাতিল করে দেওয়া হবে।”
কারও কাছ থেকে টুকলি পাওয়া গেলে সঙ্গে বাতিল করা হবে তার খাতা। প্রয়োজনে বাতিল হতে পারে রেজিস্ট্রেশনও। এছাড়াও শিক্ষকদের উপর হামলা, পরীক্ষা কেন্দ্রে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠলেও পরীক্ষার্থীকে আরএ করা হবে। গোটা ঘটনায় স্কুলের গাফিলতি প্রমাণিত হলে বাতিল করা হতে পারে অনুমোদন। গতবারের তুলনায় সামান্য কমে এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ৭ লক্ষ ৯০ হাজার পরীক্ষার্থী। এবছর ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭২ হাজার বেশি। এ বছরই প্রথম সংসদের তরফে একটি নতুন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। প্রত্যেকটি পরীক্ষার ঘরে তিনজন নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন। এদের মধ্যে একজন প্রধান ইনভিজিলেটর। অন্যজন হবেন স্পেশাল মোবাইল অবজারভার। অর্থাৎ ঘরের ভেতর কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে আছে নাকি তা দেখার দায়িত্ব এই অবজার্ভারের। সংসদ সভাপতি জানিয়েছেন “পরীক্ষার ঘরে মোবাইল নেই তা নিশ্চিত হয়ে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে।”
তবে এবার মোবাইল ফোন আটকানোর জন্য মেটাল ডিটেক্টর ব্যাবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন সংসদ সভাপতি। মূলত রাজ্যজুড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টির মত স্পর্শ কাতর পরীক্ষা কেন্দ্রে এই মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হবে। সংসদ সভাপতি জানিয়েছেন “যারা যারা মেটাল ডিটেক্টর চেয়েছে তাদেরকেই দেওয়া হচ্ছে। তবে শরীর স্পর্শ না করে এই মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করতে হবে”। শুধু তাই নয় কোন স্কুল পরীক্ষার দায়িত্ব্ব্ব্ব পালনে গাফিলতি করলে সেই স্কুলের অনুমোদন পর্যন্ত বাতিল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংসদ সভাপতি।
২০২০ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামীকাল ১২ মার্চ (বৃহস্পতিবার) প্রথম ভাষার পরীক্ষার মাধ্যমে । ১৪ মার্চ (শনিবার) দ্বিতীয় ভাষা । ১৬ মার্চ (সোমবার ) জীবন বিজ্ঞান, বিজনেস স্টাডিজ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান। ১৭ মার্চ (মঙ্গলবার ) হেল্থ কেয়ার,অটোমোবাইল, অর্গানাইজড রিটেইলিং,সিকিউরিটি,আইটি এবং ভোকেশনাল স্টাডিজ । ১৮ মার্চ (বুধবার) অঙ্ক, মনস্তত্ব, প্রত্নতত্ব, অ্যাগ্রোনমি, ইতিহাস। ১৯ মার্চ (বৃহস্পতিবার) কম্পিউটার সায়েন্স, মর্ডার্ন কম্পিউটার অ্যাপলিকেশন, পরিবেশবিদ্যা, স্বাস্থ্য এবং শরীর বিদ্যা, মিউজিক এবং ভিজুয়াল আর্ট । ২১ মার্চ (শনিবার ) কমার্শিয়াল এবং প্রিলিমিনারিস অব অডিটিং, দর্শণ এবং সমাজবিদ্যা । ২৩ মার্চ (সোমবার )পদার্থবিদ্যা, নিউট্রিশন, এডুকেশন, অ্যাকাউন্টেন্সি। ২৫ মার্চ (বুধবার ) রসায়ন, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, সংস্কৃত, পার্সি, আরবি, ফরাসি ভাষা|শেষ হচ্ছে ২৭ মার্চ (শুক্রবার ) ভূগোল, কস্টিং এবং ট্যাক্সেসন, হো ম্যানেজমেন্ট, ফ্যামিলি রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট পরীক্ষার মাধ্যমে ।
প্রতিদিনই সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে পরীক্ষা চলবে দুপুর ১.১৫ মিনিট পর্যন্ত । হেলথ কেয়ার, অটোমোবাইল, অর্গানাইজড রিটেইলিং, সিকিউরিটি, আইটি এবং ভোকেশনাল স্টাডিজ, স্বাস্থ্য এবং শরীর বিদ্যা, মিউজিক এবং ভিজুয়াল আর্টের মতো বিষয়ের জন্য পরীক্ষার সময়সীমা ২ ঘণ্টা। টানা ষোলো দিন ধরে চলবে পরীক্ষা । পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে সংসদের হেল্প লাইন চালু করা হয়েছে। নম্বর গুলি হল, ০৩৩ ২৩৩৭৪৯৮৪,০৩৩ ২৩৩৭৪৯৮৫,০৩৩ ২৩৩৭৪৯৮৬,০৩৩ ২৩৩৭৪৯৮৭, ৯৪৩৩০৯৪০২১,৯৮৫১৯০৫৫২৯।