বসল ৫৬ লক্ষের ক্যামেরা সেন্সর, আরও কড়া নিরাপত্তায় মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ি

বসল ৫৬ লক্ষের ক্যামেরা সেন্সর, আরও কড়া নিরাপত্তায় মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ি

কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে নিরাপত্তার কড়া বেষ্টনী৷ সেই বেষ্টনী এড়িয়ে একটা মাছি গলতে পারবে না এবার৷ এমনটাই দাবি, সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের৷ কারণ, ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ঘিরে অত্যাধুনিক ক্যামেরা বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে৷ জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি ঘিরে এমন একটি নজরদারি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে, যার নজর এড়ানো দায়৷ এই গোটা ব্যবস্থাপনার জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৫৬ লক্ষ টাকা৷ এই নজরদারি ব্যবস্থায় মানুষের ভুল হলেও, জানান দেবে যন্ত্র। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তায় থাকা বাহিনী এখনও নানা সমস্যার সম্মুখীন৷ অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির আশপাশের গলিতে যাঁরা রাতপাহারায় থাকেন, তাঁদের সঙ্গে তেমন কোনও অস্ত্রই থাকে না। এমনকী অভাব রয়েছে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখার মতো পর্যাপ্ত সংখ্যক ‘ম্যান প্যাক’-এরও৷

আরও পড়ুন- ফৌজদারি ধারায় অভিযুক্ত শিক্ষক বঞ্চিত হচ্ছিলেন, দিশা দিল হাইকোর্ট

যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ‘ডিরেক্টরেট অব সিকিয়োরিটি’ এবং কলকাতা পুলিশের কর্তারা৷ তাঁদেরই এক জনের মন্তব্য, ‘‘ওই এলাকায় গেলেই বুঝতে পারবেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা আঁটসাঁট। রাতে তো দূর, দিনেও কেউ বিনা কারণে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির গলিপথে ঘোরাঘুরি করার সুযোগ পাবে না।’’ ওই পুলিশকর্তা আরও জানান, কড়া নজরদারি চালানোর জন্য ইতিমধ্যেই একটি জরুরি কন্ট্রোল রুম  তৈরি করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই শেষ হয়ে গিয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা সেন্সর লাগানোর কাজ।

দিল্লি ও মুম্বইয়ে এমনটা দেখা গেলেও নজরদারির এহেন কড়া ব্যবস্থা এ রাজ্যে এই প্রথম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ঘিরে বসানো হয়েছে ‘পেরিমিটার ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম’। নজরদারির ফাঁকফোকর এড়াতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় ক্যামেরাযুক্ত পিআইডিএস বসিয়েছে কলকাতা পুলিশ। এই বৈদ্যুতিন নজরদারি ব্যবস্থায় ৩০টি অত্যাধুনিক ক্যামেরার চোখ ২৪ ঘণ্টা সদাজাগ্রত থাকবে।  এক-একটি খুঁটির সঙ্গে উঁচু জায়গায় ক্যামেরা ও সেন্সর লাগানো ডিভাইস বা বৈদ্যুতিন যন্ত্র বসানো থাকছে। ক্যামেরায় ছবি তোলার পাশাপাশি সেন্সরের আওতায় কেউ ঢুকলেই সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত কন্ট্রোল রুমে সতর্কবার্তা যাবে। 

গতবছরের ঘটনা৷ হাতে লোহার রড নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ভিতরে রাতভর ঘাপটি মেরে বসেছিল এক যুবক। সারারাত লুকিয়ে থাকার পর পরের দিন সকালে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ সেই সময়েই মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কেন ওই যুবক সেখানে এসেছিল?‌ তা আজও জানা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনার পরই পিআইডিএস বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। দিল্লি, মুম্বইয়ের অতন্দ্র নিরাপত্তায় মোড়া এলাকায় পিআইডিএস ব্যবহার করা হলেও এই অত্যাধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা বঙ্গে প্রথম।