বেতন বঞ্চনা: ‘বিদ্রোহী’ শিক্ষকদের অবস্থান-বিক্ষোভের অনুমতি হাইকোর্টের

বেতন বঞ্চনা: ‘বিদ্রোহী’ শিক্ষকদের অবস্থান-বিক্ষোভের অনুমতি হাইকোর্টের

 

কলকাতা: এগিয়ে আসছে নির্বাচন। নীলবাড়ি দখলে উঠেপড়ে গেলেছে শাসক-বিরোধী শিবির। চলছে দশ বছরের হিসাব-নিকাশ। কতটা পূরণ হয়েছে প্রতিশ্রুতি? ভোটের আগে দীর্ঘ বেতন বঞ্চনার প্রতিবাদে আরও একবার রাজপথে নামছেন বাংলার শিক্ষকদের একাংশ৷ গণতান্ত্রিক দেশে দাবিদাওয়া আদায়ে প্রধান হাতিয়ার মিছিল-মিছিল-ধর্না-বিক্ষোভ৷ কিন্তু, তৃণমূল সরকারের আমলে মিটিং-মিছিলের অনুমতি পেতে বরংবার আদালতে ছুটতে হচ্ছে খোদ সমাজ গড়ার কারিগরদের৷ রাজপথে নেমে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হওয়ার অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বড়সড় জয় পেলেন শিক্ষকদের একাংশ৷ 

দীর্ঘ দিনের বেতন বঞ্চনার বিরুদ্ধে পার্শ্বশিক্ষক ও স্নাতক শিক্ষকদের অবস্থানে বসার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ করোনা প্রটোকল মেনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট৷ স্নাতক শিক্ষকদের অবস্থানে বসার জন্য ৭ দিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ পার্শ্বশিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান আন্দোলন করতে পারবেন৷ যদিও এর আগে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্শ্বশিক্ষকরা৷ পরে সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর সেই অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নেন পার্শ্বশিক্ষকরা৷ কিন্তু, আশ্বাস মিললেও মেলেনি সমাধান৷ বেতন বঞ্চনা ও সম কাজে সম বেতনের দাবিতে ফের অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান আন্দোলনে বসার অনুমতি পেলেন পার্শ্বশিক্ষকরা৷ অন্যদিকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বেতন বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামছেন স্নাতক শিক্ষকদের একাংশ৷ পার্শ্বশিক্ষকদের বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা পালন না করার অভিযোগ রয়েছে তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রীর বিরুদ্ধে৷ পুলিশের তরফে আন্দোলনের অনুমতি না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন শিক্ষকরা৷ 

কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি পেয়ে আগামিকাল থেকে বিকাশ ভবনের সামনে ধর্নায় বসতে চলেছে ১ লক্ষ ১০ হাজার গ্রাজুয়েট শিক্ষক৷ আদালতের রায়ের পরেও বেতন বঞ্চনার সুরাহা হচ্ছে না। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বেতন বৈষম্য দূর করতে এবার ১৮ ডিসেম্বর থেকে বিকাশ ভবনের সামনে ধর্নায় বসতে চলেছে  রাজ্যের গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকেরা৷ আদালতের অনুমতিক্রমে এই ধর্নার আয়োজন করা হয়েছে। অন্যদিকে ‘সরকারের দুয়ারে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকরা’ এই দাবি তুলে আগামী ২৩ ডিসেম্বর নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন শিক্ষকরা৷ তাঁদের দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে শিক্ষক সংগঠন বিজিটিএ৷ কী দাবি শিক্ষকদের? শিক্ষকদের অভিযোগ, বর্তমানে রাজ্য জুড়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার গ্র্যাজুয়েট শিক্ষক আছেন। যাঁদেরকে রাজ্যে পাস স্কেলের তকমা দেওয়া হয়। বর্তমানে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের সঙ্গে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের বেতনের বৈষম্য প্রায় ১০,০০০ টাকা। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্তরে এই ফারাক মাত্র ২,৭০০ টাকা। শিক্ষকদের দাবি, এই বেতন বৈষম্য দূর করে বেতনের ফারাক কমানো হোক।

আজ হাইকোর্ট স্কুলের এই দু’ধরনের শিক্ষকদের আন্দোলনের অনুমতি দিয়েছে৷ কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে, মিটিং-মিছিল-অবস্থানে বসার অনুমতি চেয়ে কেন শিক্ষকদের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে? গণতান্ত্রিক দেশের পক্ষে তা কি যথাযথ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 + eight =