করোনা আবহে স্কুল খুললে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো কতটা নিরাপদ? উঠছে প্রশ্ন

করোনা আবহে স্কুল খুললে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো কতটা নিরাপদ? উঠছে প্রশ্ন

কলকাতা: প্রায় বছর খানেক আগে চিনের উহান প্রদেশে প্রথম দেখা মিলেছিল করোনা ভাইরাসের। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত গোটা বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ নিয়েছে এই মারণ ভাইরাস। শুধু তাই নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চেনা ছন্দকেই এলোমেলো করে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। করোনার গ্রাস থেকে বাদ পড়েনি শিক্ষাব্যবস্থাও।

গত বছরের মার্চ মাস থেকে করোনা মোকাবিলায় সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছিল ভারত সরকার। তারপর কেটে গেছে প্রায় দশটা মাস। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্কুলের ক্লাস গুলোতে ঝুলছে তালা। নীচু ক্লাস থেকে শুরু করে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠনও চলছে অনলাইনেই। অনলাইন পাঠের বিরোধিতা করে বেশ কিছু দিন ধরেই স্কুল খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক তথা শিক্ষক মহলের একাংশ। করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন ভারতের বাজারে আসতে চলেছে শীঘ্রই, কিন্তু এক্ষুনি তা দেশের সমস্ত জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়। এমতাবস্থায় বাকি সব কিছুর মতোই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিও পুরোনো ছন্দে চালু হয়ে গেলে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার যথেষ্ট পরিকাঠামো আছে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

এ ব্যাপারে অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, স্বাস্থ্য বিধির বিষয়ে রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলিতে পরিকাঠামো কিছুটা ভরসাযোগ্য হলেও সরকারি স্কুল কলেজ গুলির অবস্থা শোচনীয়। বেশিরভাগ সরকারি স্কুলেই নাকি পর্যাপ্ত সাফাই কর্মী নেই, জানিয়েছেন অভিভাবকরা। শুধু তাই নয়, অনেক স্কুলেই শৌচালয়ে হাত ধোয়ার সাবান পর্যন্ত নেই বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

সাফাই কার্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের প্রধান পাপিয়া সিংহ মহাপাত্র জানান, তাঁদের স্কুলের একজন মাত্র সাফাইকর্মী রয়েছেন যিনি পরের মাসেই অবসর নিতে চলেছেন। তাঁর কথায়, “মার্চ মাস থেকে কোনো সাফাইকর্মী থাকবেন না। কোভিড পরিস্থিতির জন্য স্কুলের শৌচাগারও আরো বেশি পরিচ্ছন্ন থাকার কথা।” স্কুল খোলা নিয়ে উদ্বিগ্ন হেয়ার স্কুলের প্রধান প্রণব কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ও। “অতিমারীর পরিস্থিতিতে স্কুল খুললে কীভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে স্কুল চলবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি।” এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, “আমরা শিক্ষা দপ্তরে বারবার চিঠি লিখে স্কুলে স্থায়ী সাফাইকর্মী নিয়োগের আবেদন জানিয়েছি।” কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় নি। এমতাবস্থায় করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল খুলে গেছে কম বয়সী পড়ুয়াদের ভবিষ্যত কী হবে সেই প্রশ্ন উঠে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *