এই বেতন কি প্রাপ্য? ISRO-র বিজ্ঞানীদের যোগ্য বেতনের দাবিতে সরব গোয়েঙ্কা

এই বেতন কি প্রাপ্য? ISRO-র বিজ্ঞানীদের যোগ্য বেতনের দাবিতে সরব গোয়েঙ্কা

harsh goenka

কলকাতা: চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্য বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোকে৷ বিজ্ঞানীদের অধ্যাবসায় এবং কঠোর পরিশ্রমে ইতিহাস গড়েছে ভারত৷ কড়া হাতে সবটা সামলেছেন ইসরো প্রধান এস সোমনাথ৷ খুব সামান্য অর্থ ব্যায়ে চাঁদে মহাকাশযান পাঠিয়ে তামাম দুনিয়ায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা৷ হাতের কাছে যেটুকু যা মিলেছে, সেটাকেই সম্বল করে চাঁদের মাটিতে বিজয় পতাকা উড়িয়েছেন তাঁরা। চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্য ঘিরে দেশজুড়ে দেখা গিয়েছে প্রবল উৎসাহ ও উচ্ছ্বাস৷ কিন্তু, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র বিজ্ঞানীদের বেতন নিয়ে চোখে পড়েছে নিস্পৃহ ভাব। এই নিয়ে এবার সোচ্চার হলেন আরপিজি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হর্ষ গোয়েঙ্কা। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা কি আদৌ তাঁদের যোগ্য প্রাপ্য পাচ্ছেন? প্রশ্ন তুললেন তিনি। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় বরাবরই সক্রিয় হর্ষ৷ এবার তিনি মুখ খুলেছেন ইসরোর বিজ্ঞানীদের প্রাপ্তি নিয়ে৷ সোমবার ইসরোর বিজ্ঞানীদের আয় নিয়ে কথা বলেন তিনি৷ হর্ষ লেখেন, ‘ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ মাসে আড়াই লক্ষ টাকা বেতন পান। এটা কি যথাযথ? ওঁর মতো মানুষের কদর বুঝতে হবে। টাকা-পয়সা এঁদের অনুপ্রেরণা যোগায় না। বরং অন্য ফ্যাক্টরে তাঁরা অনেক বেশি অনুপ্রাণিত৷ তাঁরা আবেগ, ভালবাসা  দিয়েই বিজ্ঞান এবং গবেষণার কাজ করে থাকেন। দেশকে গৌরবান্বিত করতে, জাতির গৌরব বাড়াতে এবং লক্ষ্যপূরণে ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি নিয়েই নিজেদের কাজ করে যান। ওঁর মতো মানুষের সামনে আমি মাথা নত করি৷’

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়ের বেগে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে হর্ষের ওই পোস্ট। তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে নেটদুনিয়ার একটা বড় অংশ৷ নেটিজেনরাও মনে করেন, এত উঁচু পদে থাকা এমন এক সম্মানীয় ব্যক্তির জন্য এই বেতন খুবই নগন্য। জনৈক এক ইউজার টুইটারে লিখেছেন, ‘একদমই। ওঁনারা টাকা-পয়সার ধার ধারেন না৷ ভালবাসা এবং আবেগ দিয়ে কাজ করে যান এস সোমনাথের মতো ব্যক্তিরা। ওঁরাই সত্যিকারের অনুপ্রেরণা। সমাজে ওঁদের অবদান অনস্বীকার্য’। অপর এক ইউজার লিখেছেন, ‘‘মাসে ২৫ লক্ষ টাকা বেতন পাওয়া উচিত ওঁর। এখানে তর্কের কোনও জায়গা নেই৷ প্রতিভার কদর হওয়া উচিত।’’

যদিও এই প্রথম নয়, ইসরোর বিজ্ঞানীদের বেতন নিয়ে ইতিপূর্বেও প্রশ্ন উঠেছে। যাঁর নেতৃত্বে চন্দ্রযানের এই সাফল্য, তিনি কি তাঁর প্রাপ্য পারিশ্রমিক পান? তা নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে তরজা। শুধু তাই নয়, জানা গিয়েছে চন্দ্রযান-৩ এর সঙ্গে যুক্ত ইঞ্জিনিয়াররা ১৭ মাস বিনা বেতন নিরলস পরিশ্রম করে গিয়েছেন। সেই নিয়েও রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে দেশে। অন্য দেশের বিজ্ঞানীদের তুলনায় এমনিতেই ভারতীয় বিজ্ঞানীদের বেতন সামান্য। এত বড় সাফল্যের পরও কেন তাঁদের বেতন বাড়ানো হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন ওঠাটা তো স্বাভাবিক।  যা নিয়েই সোচ্চার হয়েছেন হর্ষ। 

সপ্তম বেতন কমিশন অনুযায়ী,  ইসরো প্রধান মাসে আড়াই লক্ষ টাকা বেতন ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আরও কিছু সুযোগসুবিধার পেয়ে থাকেন৷ যেমন, বাড়ি, গাড়ি ও যাতায়াত বাবদ সুযোগ-সুবিধা পান তিনি৷ এছাড়া ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন এস সোমনাথ। কিন্তু যে গুরুদায়িত্ব নিয়ে তিনি কাজ করছেন, সেই সাপেক্ষে তাঁর বেতন ও প্রাপ্তি যথেষ্ট নয় বলেই অধিকাংশের অভিমত৷ সে দিন থেকে দেখতে গেলে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা তার বিজ্ঞানীদের বছরে ৭২ হাজার ৪১৬ মার্কিন ডলার পারিশ্রমিক দেয়। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৫৭ লক্ষ টাকা। তফাতটা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six + three =