অনলাইন ক্লাসকে স্বীকৃতি সংসদের! দেখা হবে অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতির হিসেব

অনলাইন ক্লাসকে স্বীকৃতি সংসদের! দেখা হবে অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতির হিসেব

 নয়াদিল্লি:  পড়ুয়াদের পড়াশুনার গতিবিধিতে রাশ টেনেছে করোনা অতিমারী। আর এই পরিস্থিতিতে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সব পড়ুয়ারাই। তবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের দিকে বেশি নজর দিয়ে তাদের ট্যাব দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। কথামতো কাজও হয়েছে অনেকাংশে। ট্যাব হাতে পেয়ে অনলাইন ক্লাসের সাহায্যে শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিতে পারবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। আর এবার সেই অনলাইন ক্লাসের খতিয়ানকে স্বীকৃতি দিল রাজ্য সরকার।

বৃহস্পতিবার রাজ্য উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, এমাসে পরীক্ষার এনরোলমেন্ট ফর্ম দেওয়ার সময় সেখানে অনলাইন ক্লাসের সংখ্যা লিখতে হবে। এবছর অতিমারির কারণে ফিজিক্যাল ক্লাস সেভাবে হয়নি বললেই চলে, কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক এনরোলমেন্ট ফর্ম ভর্তি করার সময় লিখতে হয় ক্লাসে হাজিরার হিসেব। এবং সেই হিসেবেই অ্যাডমিট কার্ড আসে স্কুলে স্কুলে। এবার সেই ক্লাসের হাজিরার জায়গাতে লিখতে হবে অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতির হিসেব, এমনটাই জানানো হয়েছে সংসদ তরফে।

তবে এখানেই থেকে যায় একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন! আদৌ কি সব স্কুল শিক্ষক শিক্ষিকারা অনলাইন ক্লাস করিয়েছেন পড়ুয়াদের? আর যদি করিয়েও থাকেন সেখানে কতজন পড়ুয়া কতগুলি ক্লাসে উপস্থিত হতে পেরেছে? এই প্রশ্নচিহ্নের উপরেও একটি বয়ান জারি করে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, যাদের ক্লাস করা সম্ভব হয়নি, তার ওই জায়গায় ‘নট অ্যাপ্লিকেবল’ (এনএ) কথা উল্লেখ করতে পারে। অর্থাৎ, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রটি সেই পরীক্ষার্থীর জন্য প্রযোজ্য নয়।

এই বিষয়টিকে অনেকেই ভিত্তিহীন বলে মনে করছেন। এই বিজ্ঞপ্তি জারি এবং তার সূত্রে এই নতুন নিয়মকে কিছুটা অপ্রয়োজনীয় বলেই মনে করছেন কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস। তিনি এই বিষয়ে বলেন, বিভিন্ন স্কুল নিজেদের সুবিধামতো অনলাইন ক্লাস নিচ্ছে, কেউ নিচ্ছে, আবার কেউ নিচ্ছেই না। তিনি আরো উল্লেখ করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাস বাধ্যতামূলক করার বিষয়েও সংসদের তেমন সদিচ্ছা প্রকাশিত হয়নি ইতিপূর্বে। তাই সবকিছু মিলিয়ে এই বিষয়টির বিশেষ গুরুত্ব তিনি দেখছেন না।

সাধারণত উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সকল পরীক্ষার্থীর ৭৫ শতাংশ ক্লাস উপস্থিতি দেখা হয়। কিন্তু তা সাধারণত লক্ষ্য করা যায়না কোনোবছরই। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়াদের উপস্থিতি অতি নগন্য হয় সব স্কুলেই। প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস ছাড়া তাদের দেখা যায়না সাধারণ ক্লাসে। আর এভাবেই হয় পরীক্ষা। কিন্তু কলা ও বাণিজ্যিক বিভাগের চিত্রটা কিছুটা উল্টো হয় অন্য বছর। তাদের কথা ভেবেই এবছরের এই সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করা হয় সংসদ তরফে। এবার এই অনলাইন ক্লাসের উপস্থিতির কলাম কি কিছু প্রভাব ফেলবে পরীক্ষার উপর? আদৌ কি এতে অনলাইন ক্লাসের তাগিদ বৃদ্ধি হবে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে? নাকি সবটাই হবে নিয়মরক্ষা? প্রশ্নটা রয়েই যাচ্ছে। তবে ট্যাব হাতে পেয়ে এর উত্তর কিছুটা আলাদা হতে পারে বলেও আশাবাদী করছে রাজ্যের শিক্ষামহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − 15 =