শাকসবজিতে কালোবাজারি? খতিয়ে দেখতে খুচরো-পাইকারি বাজারে হানা আধিকারিকদের

কারবারের কাগজপত্র খতিয়ে দেখলেন মহকুমা শাসক রাজীব মণ্ডল। যদিও ব্যবসায়ীরা কালোবাজারির তত্ত্ব মানছেন না। তাঁদের দাবি, আমদানির ওপরেই আনাজের দাম বাড়া-কমা নির্ভর করে। তাঁরা কম লভ্যাংশ রেখেই খুচরো বাজারে মাল বিক্রয় করছেন বলে দাবি।

নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: বাজারে গেলেই এখনও হাত পুড়ছে আম বাঙালির। আলু সহ শাকসবজির এমন আগুন দাম সাম্প্রতিক কালে মনে করা যাচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই আনাজ ব্যবসায়ীদের কাছে ন্যায্যমূলে সবজি বিক্রি করার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তাতেও কোনও ফল হচ্ছে না। দাম কমার কোনও নামই নেই। বাধ্য হয়ে এবার হাতেকলমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামল প্রশাসন। এদিন বীরভূমের সিউড়ি বাজারে আচমকা হানা দিয়েছেন সরকারি আধিকারিকরা। সঙ্গে ছিলেন মহকুমা শাসকও।   

কারবারের কাগজপত্র খতিয়ে দেখলেন মহকুমা শাসক রাজীব মণ্ডল। যদিও ব্যবসায়ীরা কালোবাজারির তত্ত্ব মানছেন না। তাঁদের দাবি, আমদানির ওপরেই আনাজের দাম বাড়া-কমা নির্ভর করে। তাঁরা কম লভ্যাংশ রেখেই খুচরো বাজারে মাল বিক্রয় করছেন বলে দাবি। প্রথমে সিউড়ির পাইকারি নেতাজি মার্কেট হাজির হন রাজীব এবং অন্যান্য সরকারি আধিকারিকরা। সেখানে  আড়তদারদের কাছে আলু এবং অন্যান্য শাকসবজির ক্রয়মূল্য খতিয়ে দেখেন। এরপর সেখান থেকে সিউড়ি শহরের সাঁইথিয়া বাইপাস এলাকায় থাকা খুচরো সবজি বাজারে পৌঁছন তাঁরা। খুচরো বাজারে শাকসবজির কী দাম যাচ্ছে তা যাচাই করেন।

জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা দেখেন, নেতাজি মার্কেটে আলুর পাইকারি বাজারে ৫০ কেজি বিক্রি হয়েছে ১৩৬০ টাকা দরে। টিনবাজার এলাকার আড়তদারের কাছে আলু বিক্রি হয়েছে ১৩৯৫ টাকা দরে। এরপরে ওই আড়তদারের কাছে উপস্থিত হন আধিকারিকরা। তিনি হিমঘরের  কাগজপত্র দেখালে বিস্মিত হন সরকারি কর্তারা। আড়তদারদের একাংশের দাবি, হিমঘরে আলুর দাম এক এক জায়গায় এক এক রকম নিচ্ছে। প্রশাসন বলা সত্ত্বেও হিমঘর থেকে প্রশাসনের নির্ধারিত দরে আলু পাওয়া যাচ্ছে না। মূলত হিমঘর থেকে সরাসরি আলু বিক্রি করা হয় না। মাঝে একশ্রণির ফড়েরা লভ্যাংশ নেয়। দামের হেরফেরও তারই ফলশ্রুতি।

সিউড়ি পাইকারি বাজার নেতাজি মার্কেটের সম্পাদক সুজিতকুমার সাউ জানান, ‘আমরা আলু ৫০ কেজি প্রতি ১৫ টাকা লাভে খুচরো বাজারে বিক্রি করছি। হিমঘর থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে আমাদের। সেটা যদি প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তাহলে দাম মানুষের নাগালেই থাকবে।’ এদিকে সদর মহকুমা শাসক রাজীব মন্ডল বলেন, ‘শাকসবজি অগ্নিমূল্য হওয়ার কারণে শহরের  পাইকারি ও খুচরো, দুটি বাজারে আমরা গিয়েছিলাম। পাইকারি বাজারে তাদের আমদানিকৃত শাকসবজির কাগজপত্র খতিয়ে দেখেছি। আলু বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছে। চড়া দামে পাইকারি বিক্রেতারা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। হিমঘর থেকেই দাম নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করা হবে।’
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × one =