নয়াদিল্লি: ভারতের ব্যাঙ্কিং সেক্টরে একাধিক সংস্কার আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। একাধিক ব্যাঙ্ককে বেসরকারিকরণের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির পরিচালন ব্যবস্থাকে কর্পোরেট রঙ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। অন্যদিকে আরও বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ককে পরস্পরের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে চলেছে কেন্দ্র। পাশাপাশি স্বেচ্ছাবসর নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। সম্প্রতি ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক তাদের স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প ঘোষণা করে দিয়েছে৷ জানা গিয়েছে, অন্যান্য একাধিক ব্যাঙ্ক এই স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প শুরু করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে৷
সম্প্রতি ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে একটি ব্লু প্রিন্ট কেন্দ্র সরকারকে জমা দিয়েছে নীতি আয়োগ। চলতি অর্থবর্ষে কিছুদিন আগেই মোট ১০টি ব্যাঙ্ককে একত্রিত করে ৪টি ব্যাঙ্কে পরিণত করেছে কেন্দ্র। মূলত মাথা ভারী প্রশাসনিক প্রক্রিয়া কমাতেই এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে কেন্দ্র। জানা গিয়েছে, কিছুদিনের মধ্যেই ব্যাঙ্কের সংখ্যা কমিয়ে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের আয়তন আরও কমাতে চলেছে কেন্দ্র সরকার। সরকারি তরফে বলা হয়েছে, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা এবং কানাড়া ব্যাঙ্ক এই চারটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যাঙ্ক নিয়েই ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র চলবে। এর সঙ্গেই ব্যাঙ্ক কর্মী ও অফিসারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ডিজিটাল ফ্রড, লোন ট্র্যাকিং ইত্যাদি বিভাগকে আরও শক্তিশালী করতে চায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেই কথা মাথায় রেখেই কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে চায় কেন্দ্র।
অন্যদিকে, আগেই আইডিবিআই ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণের কথা হয়েছিল, এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল পাঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র, ইউকো ব্যাঙ্ক। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি অন্যান্য ব্যাঙ্কের অংশীদারিত্ব বেচে দিতে চলেছে কেন্দ্র। জানা গিয়েছে, এক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে ২৬ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করা হবে, বাকিটা থাকবে সরকারের হাতে। সরকার জানিয়েছে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা না গেলে, স্বেচ্ছাবসরের পর এই সমস্ত ব্যাঙ্কগুলিকে প্রধান চারটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে একত্রিত করে দেওয়া হবে।
দেশজুড়ে স্টেট ব্যাঙ্কের প্রায় আড়াই লক্ষ কর্মী রয়েছেন। লকডাউন পর্বে তাঁদের মধ্যে একাধিক কর্মী নিয়মিত অফিসে যেতে পারছেন না। পাশাপাশি একটি শহর থেকে অন্য শহরে বদলির প্রক্রিয়াও আটকে আছে। সেই কারণেই গত ৫ মাসে স্বেচ্ছা অবসর সংক্রান্ত আবেদনের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তাই স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পে ইতিমধ্যেই সেকেন্ড ইনিংস ট্যাপ ভলান্টারি রিটায়ারমেন্ট স্কিম ঘোষণা করেছে। প্রতি বছর ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এই প্রকল্প চালু থাকবে। স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পে চাকরিরত আগ্রহীরা আবেদন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের যতদিন চাকরির মেয়াদ রয়েছে, সেই সময়সীমার মোট প্রাপ্য বেতনের ৫০ শতাংশ দেওয়া হবে 'গোল্ডেন হ্যান্ডশেক' হিসেবে৷