কলকাতা: সাগর বক্ষে লুকিয়ে রয়েছে অঢেল সম্পদের ভাণ্ডার৷ সাধারণ মানুষের নাগাল এড়িয়ে নীল জলরাশির অতলে রয়েছে বহু বৈচিত্র৷ তবে ব্যাপ্তি ও গভীরতার দিক থেকে বরাবরই বিজ্ঞানীদের আকর্ষণের কেন্দ্রে থেকেছে প্রশান্ত মহাসাগর৷ এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মহাসাগর৷ এই মহাসাগরের চোরা স্রোতের পরতে পরতে লুকিয়ে রহস্যের ভাণ্ডার৷ সেই রহস্যের সন্ধানেই ঝাঁপ দেন দুঃসাহসিক অভিযাত্রীরা। আর তাতেই মিলল রহস্যময় বস্তুর খোঁজ৷
অজানার খোঁজে গত মাসে মহাসাগরের জলে ডুব দিয়েছিলেন তেমনই এক অভিযাত্রীর দল৷ প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে তাঁরা এমন এক বস্তু আবিষ্কার করেন, যা এর আগে কেউ কখনও দেখেননি। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে তারা খুঁজে পান সোনালি রঙের অচেনা একটি ডিম্বাকার বস্তু৷ বস্তুটি এক জায়গায় স্থির হয়ে রয়েছে৷ তবে বিজ্ঞানীদের অনুমান, এটা অচেনা কোনও প্রাণী হলেও হতে পারে।
আলাস্কা উপসাগরের গভীরতা সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধান এবং সাগরে নিমজ্জিত রহস্য অনুসন্ধানে প্রশান্ত মহাসাগরে এক দল গবেষক তথা অভিযাত্রী পাঠায় আমেরিকার ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ)৷ সমুদ্রে কোরাল এবং স্পঞ্জের অনুসন্ধান এবং আগ্নেয়গিরির উপস্থিতি নিয়েও কাজ করছেন ওই বিজ্ঞানীরা।
গত অগাস্ট মাসে প্রশান্ত মহাসাগরে ঝাঁপ দেয় এনওএএ-র ওই গবেষক দল। ২৪ দিনের এই অভিযান পর্ব শুরু হয় আলাস্কা উপকূল থেকে৷ সমুদ্রের চার মাইল পর্যন্ত গভীরে পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। ৩০ অগাস্ট, আলাস্কার দক্ষিণ উপকূল থেকে প্রায় ৪০০ কিমি দূরে সমুদ্রের নীচে রহস্যময় সোনালি ‘ডিম’-এর হদিশ পান তাঁরা৷ ওই অভিযানের সরাসরি সম্প্রচার করা হয়৷
গবেষকেরা জানান, ওই সোনালি রঙের ডিম্বাকার বস্তুটিক একটি অংশে একটা ফুটো দেখা গিয়েছে। সেটা দেখার পরই তাঁদের অনুমান, এটা অচেনা কোনও সামুদ্রিক প্রাণী হলেও হতে পারে। যার বাইরে রয়েছে শক্ত মজবুত একটা খোলস৷ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, সমুদ্রের অলতে আবিষ্কৃত এই রহস্যময় বস্তুটি আসলে কী, তা জানতে ইতিমধ্যেই পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। রহস্যে মোড়া সোনালি ‘ডিম’টি ভালো করে বিশ্লেষণ করে দেখছেন বিজ্ঞানীরা৷
তাঁরা জানিয়েছেন, অভিযাত্রীদের ডুবোযানের আলো পড়ায় ওই বস্তুটিকে সোনালি রঙের দেখাচ্ছিল। তবে অন্যান্য বিভিন্ন ছবি খতিয়ে দেখে বিজ্ঞানীরা প্রায় নিশ্চত ওই বস্তুটি সোনালি নয়, আদতে হলদে-বাদামি রঙের। এর বাইরের ত্বকের টিস্যুর মতো পদার্থ দিয়ে তৈরি বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অন্তত বাইরে থেকে দেখে তেমনটাই ধারণা৷