gazette
কলকাতা: কেন্দ্রের জাতীয় শিক্ষানীতি রাজ্য সরকার যে পুরোপুরি গ্রহণ করবে না, সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু৷ তবে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে রাজ্যের নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হল। শনিবার সকালে স্কুল শিক্ষা দফতরের পোর্টালে নয়া শিক্ষানীতি সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হল।
নিজস্ব শিক্ষানীতি বলবৎ করার লক্ষ্যে বিশেষ কমিটি গঠন করেছিল রাজ্য। সেই কমিটির প্রস্তাবিত শিক্ষানীতিকেই এবার মান্যতা দিল সরকার। গ্যাজেট নোটিফিকেশন জারি করে শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে যে, আজ অর্থাৎ শনিবার থেকেই রাজ্যে নতুন শিক্ষানীতি গ্রাহ্য হবে।
রাজ্যের নতুন শিক্ষানীতিতে কোন কোন বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে? ২০৩৫ সালের মধ্যে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটানোর লক্ষ্য নিয়েই এই শিক্ষানীতি তৈরি করা হয়েছে।
নতুন শিক্ষানীতি অনুযায়ী প্রি-প্রাইমারি ক্লাস হবে এক বছরের আর চার বছর হবে প্রাথমিক ক্লাস৷ বাকি নিয়ম মোটামুটি একই থাকছে। অর্থাৎ পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি এবং নবম-দশম শেষে মাধ্যমিক। তবে অষ্টম শ্রেণি থেকেই ধাপে ধাপে সেমেস্টার পদ্ধতি চালু করার চিন্তাভাবনা চলছে৷
একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় সেমেস্টার পদ্ধতি চালু করার কথা আগেই জানিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এমসিকিউ ধাঁচে হবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে যে সব পড়ুয়া একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবে, তারা নয়া শিক্ষানীতির আওতায় পড়বে। সেমেস্টার পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করে প্রথম ফলাফল ঘোষণা হবে ২০২৬ সালে। নভেম্বর মাসে দ্বাদশ শ্রেণির প্রথম সেমেস্টারে এমসিকিউয়ের মাধ্যমে মূল্যায়নের ভাবনা রয়েছে সংসদের। বলা হয়েছে, প্রত্যেক স্কুলে এবার থেকে ‘গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি’-র আয়োজন করা হবে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়াশোনা করতে যাতে পড়ুয়াদের অসুবিধা না হয়, সেই লক্ষে স্কুল পর্যায় থেকেই এই ভাবনা চিন্তা শুরু করবে শিক্ষা দফতর।
জোড় দেওয়া হয়েছে বাংলা ও ইংরেজি ভাষার উপরে৷ রাজ্য শিক্ষানীতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলা এবং ইংরেজি, এই দুটি ভাষা ছাত্রছাত্রীদের পড়তেই হবে। তৃতীয় ভাষা হিসাবে বাংলা, হিন্দি এবং সংস্কৃতকে গুরুত্ব দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে৷ প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা পড়াতে হবে।
এছাড়াও পড়ুয়াদের সুবিধার্থে স্কুলগুলির সঙ্গে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সমন্বয় করা হবে। ভিন রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাতে এ রাজ্যে আসে, সেদিকেও নজর রাখা হয়েছে।
রাজ্যের নয়া শিক্ষানীতি অনুযায়ী, সকল পড়ুয়ার জন্য একটি ‘ইউনিক আইডেন্টেটি কার্ড’ তৈরি করা হবে। ওই কার্ডের থাকবে একটি মেমোরি চিপ। তাতে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পডুয়াদের পরীক্ষার ফলাফল নথিবদ্ধ থাকবে। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে যেমন গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা করাটা বাধ্যতামূলক, তেমনই গ্রামীণ এলাকায় দিয়ে শিক্ষকতা করতে হবে শিক্ষকদেরও। শিক্ষক নিয়োগের সময়ই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷